বিদেশি শিক্ষার্থীরা কোন ভরসায় বাংলাদেশে পড়তে আসবেন? | মতামত নিউজ

বিদেশি শিক্ষার্থীরা কোন ভরসায় বাংলাদেশে পড়তে আসবেন?

পিটানোর সময় নাকি হামলাকারীরা বলছিল ভিসি মাছুদকে কেন নামাইছিস। নামাইছিসতো নামাইছিস আবার আনন্দ মিছিল কেন করলি?

#বিশ্ববিদ্যালয় #শিক্ষার্থী #শিক্ষক #কুয়েট

বিদেশি শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশে কেন পড়তে আসবে? আর না আসলে আমরা কি বিশ্ববিদ্যালয়কে আর বিশ্ববিদ্যালয় বলতে পারব? বিশ্ববিদ্যালয় হতে হলে সেখানে দেশি-বিদেশি ছাত্রছাত্রী থাকবে, শিক্ষক থাকবে।

রোববার (২৭ এপ্রিল) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন এ কথা বলেছেন।

তার পোস্টটি দৈনিক শিক্ষাডটকমের পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো-

এইবার স্কটল্যান্ডের বিভিন্ন পর্যটন জায়গা বা কেন্দ্র ঘুরার সময় আমার স্ত্রী হঠাৎ বলল তোমাদের পুরান ঢাকা অসাধারণ একটা পর্যটন কেন্দ্র হতে পারতো। কথাটা শুনে আমি একটু থমকে গিয়েছিলম।

কিছুক্ষণের জন্য ওর আর কথা আমার কানে ঢুকছিল না কারণ আমি তখন ইতিমধ্যেই চিন্তার রাজ্যে ঢুকে গেছি। ভাবছিলাম সত্যিইতো। আমাদের সরকার আর আমাদের মানুষগুলো যদি পর্যটনবান্ধব হতো তাহলে সত্যি সত্যি এক অসাধারণ সুন্দর পর্যটন কেন্দ্র হতে পারতো।

আমরা যদি ঢাকার চারপাশের নদীগুলোকে দূষণমুক্ত করে পর্যটকদের জন্য ভ্রমণের ব্যবস্থা করতে পারতাম কত মানুষের কর্মসংস্থান হতে পারতো কল্পনা করেছেন? কিন্তু পর্যটক শুধু পর্যটন কেন্দ্র থাকলেই আসে না।

আসে সেই দেশের রাস্তাঘাট কেমন, ট্রাফিক ব্যবস্থা কেমন, মানুষ কেমন, আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা কেমন ইত্যাদি সব মিলিয়ে একটা ধনাত্মক ইম্প্রেশন বা পারসেপশন তৈরি হলে পরেই কেবল মানুষ আসবে।

কিছুদিন আগে এক ব্রাজিলিয়ানের সঙ্গে কথা হচ্ছিল। কূটনৈতিক চাকরির কারণে তাকে ৩টি বছর বাংলাদেশে থাকতে হয়েছে। সে বলল এই থাকাটা তার জীবন থেকে ৩টি বছর কেড়ে নিয়েছে। তার সবচেয়ে খারাপ লেগেছে ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থা। নিজে ড্রাইভ করতো।

পৃথিবীর অনেক দেশে গাড়ি চালিয়েছেন কিন্তু এত স্ট্রেস নিয়ে পৃথিবীর কোথাও গাড়ি চালাতে হয়নি। আরেকবার এক বিদেশি দম্পতি শ্রীলংকা ঘুরে এসে বলছিল সেখানকার মানুষ অসাধারণ ভালো।

বিদেশি বলে কেউ তাদের চিট করতে মুখিয়ে থাকেনি। জিনিসপত্র ও হোটেলে থাকা খাওয়া বাংলাদেশের চেয়ে সস্তা কিন্তু আরও ভালো।

আমরা আসলে ভালো আচরণ আর নিজ চরকায় তেল না দিয়ে মন্দ আচরণ আর অন্যদের দিকে তাকিয়ে থাকলে বিদেশি পর্যটক কেন বিনিয়োগকারীরাও আসবে না। এতে ক্ষতিটা কার?

এখানে নিজের ক্ষতি দেখার চেয়ে কালেক্টিভ ক্ষতি অর্থাৎ দেশের ক্ষতির দিকে তাকাতে হবে।

বিনিয়োগকারী ও পর্যটক আসলে দেশের অর্থনীতি ভালো হবে। দেশের অর্থনীতি ভালো হলে দেশের ছেলেমেয়েদের কর্মসংস্থান ভালো হবে আর সেটি হলে দেশ সকলের জন্য সভ্য ও বসবাসযোগ্য হবে।

এই জার্নিটা পৃথিবীর অনেক দেশ অনেক বছর আগেই সম্পন্ন করে ফেলেছে। আমরা এখনো সেই প্রিমিটিভ যুগে বুদ হয়ে আছি।

আজকে সংবাদে দেখলাম কুয়েটের কয়েকজন ছাত্রকে পিটিয়েছে। পিটানোর সময় নাকি হামলাকারীরা বলছিল ভিসি মাছুদকে কেন নামাইছিস। নামাইছিসতো নামাইছিস আবার আনন্দ মিছিল কেন করলি?

এইরকমভাবে ভিসি পৃথিবীর কোন ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ হয় না। হলে আন্দোলন করে নামায় না। আবার নামাইলে এইরকমভাবে কাউকে মার খেতে হয় না।

এই ইনসিডেন্ট প্রমাণ করে আমরা এখনো কতটা প্রিমিটিভ। তাহলে বিদেশি শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশে কেন পড়তে আসবে? আর না আসলে আমরা কি বিশ্ববিদ্যালয়কে আর বিশ্ববিদ্যালয় বলতে পারব? বিশ্ববিদ্যালয় হতে হলে সেখানে দেশি-বিদেশি ছাত্রছাত্রী থাকবে, শিক্ষক থাকবে।

শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল  SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।

#বিশ্ববিদ্যালয় #শিক্ষার্থী #শিক্ষক #কুয়েট