সমন্বয়কদের দুই পক্ষে পাল্টাপাল্টি হা*মলা, আ*হত ৩

সমন্বয়কদের দুই পক্ষে পাল্টাপাল্টি হা*মলা, আ*হত ৩

ঘটনার নিন্দা জানিয়ে রাত সাড়ে আটটায় প্রেস ক্লাবে জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডাকে কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রাসেল আহমেদসহ অন্যরা। রাসেল অভিযোগ করেন, আরেক সমন্বয়ক রেজাউর রহমান ও রাফি এই হামলায় জড়িত। সংবাদ সম্মেলনের কিছুক্ষণ পর সেখানে হাজির হন অভিযুক্ত সমন্বয়ক রাফি। অভিযোগ অস্বীকার করে দোষীদের বিচারের দাবি জানান তিনি। পুরো ঘটনাটি নিয়ে দু’পক্ষের অনুসারীরেই একে অপরকে দোষারোপ করছেন।

#বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন

চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। একপক্ষ আরেকপক্ষকে সন্ত্রাসী এবং ছাত্রলীগ-ছাত্রদলের দোসর বলে অভিযুক্ত করেছে। একপক্ষের নেতৃত্বে ছিলেন কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ এবং আরেকপক্ষের নেতৃত্বে ছিলেন কেন্দ্রীয় সহ-সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি।

চট্টগ্রামে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়কদের মাঝে বিবাদের জেরে এক ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে মুখ্য সংগঠক হান্নান মাসুদ। একই সময় সমন্বয়ক রাসেল আহমেদকেও মারধরের আভিযোগ উঠেছে আরেক সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফির বিরুদ্ধে। এনিয়ে রাসেলের অনুসারীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করতে গেলে সেখানেও দেখা দেয়া উত্তেজনা। শেষ পর্যন্ত যার যার অবস্থান ব্যাখ্যা করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন দুই সমন্বয়ক।

আরো পড়ুন: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই নেতার ওপর হা*মলার অভিযোগ

ঘটনার সূত্রপাত শনিবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায়। এর আগে, বিকেলে জুলাই প্রোক্লেমেশন জারির দাবি জানিয়ে লিফলেট বিতরণ শেষে সন্ধ্যায় নগরীর ওয়াসায় একটি অফিসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, শিক্ষার্থীরা মিলে মিটিং করে। একপর্যায়ে সেখানে ছাত্রলীগ নিয়ন্ত্রিত ডট গ্যাংয়ের সদস্যরা মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসুদ, কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রাসেল আহমেদসহ বেশ কিছু শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে। ঘণ্টাখানেকের মতো অবরুদ্ধ থাকার পরে ছাত্রদলের কর্মীদের সহায়তায় বেরিয়ে আসে তারা।

এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে রাত সাড়ে আটটায় প্রেস ক্লাবে জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডাকে কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রাসেল আহমেদসহ অন্যরা। রাসেল অভিযোগ করেন, আরেক সমন্বয়ক রেজাউর রহমান ও রাফি এই হামলায় জড়িত।

সংবাদ সম্মেলনের কিছুক্ষণ পর সেখানে হাজির হন অভিযুক্ত সমন্বয়ক রাফি। অভিযোগ অস্বীকার করে দোষীদের বিচারের দাবি জানান তিনি। পুরো ঘটনাটি নিয়ে দু’পক্ষের অনুসারীরেই একে অপরকে দোষারোপ করছেন।

কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ জানিয়েছেন, শনিবার চট্টগ্রামে ‘ছাত্রলীগ নিয়ন্ত্রিত ডট গ্যাং’ তাদের ওপর এই হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদ ও সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে রাত ৯টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে এক প্রেস ব্রিফিং করা হয়।

এসময় আবদুল্লাহ আল রাফি বলেন, ‘পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি ছিল না। হান্নান রাতে কল দিয়ে বলেছেন, আমি চট্টগ্রামে আসতেছি। লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি ছিল, সেটা। তিনটায় কর্মসূচি ছিল। আমি ক্যাম্পাসে থাকায় ৪টায় শহরে আসছি। আমি ঢুকলাম। হান্নান মাসুদ, রাসেল ছিলেন।’

সংবাদ সস্মেলন চলাকালে তখনই আরেকপক্ষ প্রেস ক্লাবের হলে ঢোকে। চাঁদাবাজের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না- স্লোগান দিতে থাকে তারা। এতে দুইপক্ষ মুখোমুখি হলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। রাফি সংবাদ সম্মেলন বন্ধ করে হল থেকে বের হয়ে যান। সন্ত্রাসী হামলার বিচার দাবি করেন।

রাফির অনুসারী আহত জুনায়েদুল ইসলাম বলেন, ‘মাসুদকে আজকের কর্মসূচি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি আমাকে “হু আর ইউ। যাকে জানানোর দরকার ছিল, আমি তাদের জানিয়ে চট্টগ্রামে এসেছি” বলেন। তখন আমি বলি, আমাদের যারা চিনে না, আমরাও সেই কেন্দ্রীয় সমন্বয়ককে চিনি না। তখন লালখান বাজার এলাকায় কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মাসুদ, রাসেলের সামনে আমাদেরকে মারধর করা হয়।’

রাফির আরেক অনুসারী চট্টগ্রাম কলেজের সমন্বয়ক ফাতেমা খাতুন বলেন, ‘ছাত্রদলের ওমর ফারুক, তানভীর শরীফ, কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রাসেলের নেতৃত্বে হামলা চালিয়েছে। তখন কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসুদ উপস্থিত ছিলেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসুদ টোকাই নিয়ে এসেছিলেন। ছুরি, রাম দা, কিরিচ নিয়ে টোকাইরা আমাকে, ওয়াদুদ মোরশেদ ও আন্দোলনে আহত জুনাইদুল ইসলামকে মারধর করে।’

এর আগে, শনিবার বিকেল ৩টায় নগরের বিপ্লব উদ্যানে পথসভা, লিফলেট বিতরণ ও জনসংযোগ কর্মসূচি পালন করেন আব্দুল হান্নান মাসউদ ও রাসেল আহমেদ।

#বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন