কাগজের মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন শিক্ষার্থীরা | বিবিধ নিউজ

কাগজের মিনারে শ্রদ্ধা জানালেন শিক্ষার্থীরা

উপজেলার দুর্বাডাঙ্গা ইউনিয়নের কামিনীডাঙ্গা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় ও কুশরীকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় একই চত্বরে অবস্থিত। দুই বিদ্যালয়ের জন্য নির্মিত একটি শহীদ মিনারে বিভিন্ন জাতীয় দিবসে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা শ্রদ্ধা নিবেদন করে আসছিল।

যশোরের মনিরামপুরের এক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার ভেঙে শৌচাগার (ওয়াশরুম) নির্মাণ করায় শিক্ষার্থীরা কাগজের শহীদ মিনার তৈরি করে তাতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আজ শুক্রবার সকালে কামিনীডাঙ্গা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ইটের স্তূপে সাদা কাগজ মুড়িয়ে শহীদ মিনার বানিয়ে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে। এ সময় বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা শহীদ মিনার ভেঙে শৌচাগার নির্মাণ করা শিক্ষক আব্দুর রশিদের শাস্তি দাবি করে।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার দুর্বাডাঙ্গা ইউনিয়নের কামিনীডাঙ্গা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় ও কুশরীকোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় একই চত্বরে অবস্থিত। দুই বিদ্যালয়ের জন্য নির্মিত একটি শহীদ মিনারে বিভিন্ন জাতীয় দিবসে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা শ্রদ্ধা নিবেদন করে আসছিল। সম্প্রতি কুশরীকোনা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ সেই শহীদ মিনার ভেঙে সেখানে শৌচাগার নির্মাণ করেন।

এ নিয়ে চলতি মাসের প্রথম দিকে কামিনীডাঙ্গা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কামরুল হাসান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। পাশাপাশি তিনি বিদ্যালয়ের জমি দখল করে গাছ রোপণ ও শহীদ মিনার ভেঙে দেওয়ার অভিযোগে ১১ ফেব্রুয়ারি কুশরীকোনা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ ও সহকারী শিক্ষক সুকুমার মল্লিকের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। এরপর গ্রেপ্তারি পরোয়ানার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ গত বুধবার দুই শিক্ষককে আদালতে হাজির করলে তাঁদের জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়।

শিক্ষক কামরুল বলেন, ‘শহীদ মিনার ভেঙে টয়লেট নির্মাণের খবর ছড়িয়ে পড়লে তড়িঘড়ি নিজেদের ভবন ঘেঁষে নামমাত্র শহীদ মিনার নির্মাণ করেন আব্দুর রশিদ। আমরা বিষয়টি মেনে নিইনি। ভাষা দিবসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আমাদের মেয়েরা ইট ও কাগজ দিয়ে শহীদ মিনার বানিয়ে তাতে ফুল দিয়েছে।’

শিক্ষক কামরুল হাসান জানান, ১৯৮৩ খ্রিষ্টাব্দে কামিনীডাঙ্গা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর এর জমিতে কুশরীকোনা প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপিত হয়। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নিজ খরচে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়। তাদের সঙ্গে কোনো পরামর্শ ছাড়াই প্রভাব খাটিয়ে তা ভেঙে জমি দখলে নিয়ে সেখানে শৌচাগার নির্মাণ করেছেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ বলেন, ‘আমাদের বিদ্যালয়ে সরকারিভাবে ওয়াশরুম বরাদ্দ এসেছে। বিদ্যালয়ের মাঠে বৃষ্টির পানি জমে। এ কারণে উপযুক্ত জায়গা না পেয়ে পুরোনো শহীদ মিনার ভেঙে সেই জায়গা ওয়াশরুম নির্মাণের জন্য দেওয়া হয়েছে। চলতি মাসের ৬ তারিখে নতুন করে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে। আমাদের শিক্ষার্থীরা সেখানে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে।’

অভিযোগ তদন্তের দায়িত্ব পাওয়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবু মুত্তালিব আলম বলেন, ‘প্রধান শিক্ষকের কাছে শহীদ মিনার ভাঙার লিখিত জবাব চেয়েছি। তিনি জবাব দিয়েছেন। ব্যবস্থা গ্রহণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।’