বই চেয়ে পাননি শিক্ষা উপদেষ্টা নিজেই | বই নিউজ

বই চেয়ে পাননি শিক্ষা উপদেষ্টা নিজেই

‘আমি শিক্ষা উপদেষ্টা হয়েও এনসিটিবির কাছে বই চেয়ে পাই না’

#শিক্ষা উপদেষ্টা #বই #পাঠ্যবই #বাংলাদেশ #অন্তর্বর্তীকালীন সরকার

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা ড. সি আর আবরার বুধবার ফরিদপুরে এক অনুষ্ঠানে এনসিটিবির কার্যকারিতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদ ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও আলোচনাসভা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি ক্ষোভের সঙ্গে জানান, স্বয়ং শিক্ষা উপদেষ্টা হয়েও তিনি জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) কাছে বই চেয়ে পাননি। ড. আবরার আরও গুরুতর অভিযোগ করেন যে, এনসিটিবির মূল কাজ পাঠ্যক্রম তৈরি ও পরিমার্জন করা হলেও, তাদের সিংহভাগ সময় ব্যয় হচ্ছে বই ছাপানোর কাজে। তিনি মন্তব্য করেন, পাঠ্যক্রমের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নজর দেওয়ার জন্য এনসিটিবির কর্মকর্তাদের কাছে মাত্র ২০ ভাগ সময় অবশিষ্ট থাকে। এই পরিস্থিতিতে মানসম্মত পাঠ্যক্রম প্রণয়ন এবং তার সঠিক বাস্তবায়ন নিয়ে তিনি গভীর সংশয় প্রকাশ করেন।

শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, "যাদের কাজ পাঠ্যক্রম ঠিক করা, তারা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে বই ছাপানোর কাজে। আমি নিজেই এনসিটিবির কাছে বই চেয়ে পাইনি।" তার এই মন্তব্য এনসিটিবির কর্মপদ্ধতি এবং দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে একটি বড় প্রশ্নবোধক চিহ্ন তৈরি করেছে।

অনুষ্ঠানে ড. আবরার পাঠ্যক্রমের গুরুত্বের ওপর আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, একটি যুগোপযোগী এবং বিজ্ঞানভিত্তিক পাঠ্যক্রমই একটি জাতির ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সঠিক পথে চালিত করতে পারে। কিন্তু যদি পাঠ্যক্রম প্রণয়নের কাজটি অবহেলিত থাকে এবং পর্যাপ্ত সময় ও মনোযোগ না দেওয়া হয়, তাহলে শিক্ষার গুণগত মান কখনোই উন্নত করা সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, বই ছাপানো নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ, তবে এটি এনসিটিবির মূল দায়িত্ব নয়। এই কাজের জন্য অন্যান্য সরকারি বা বেসরকারি সংস্থা রয়েছে। এনসিটিবির উচিত তাদের প্রধান দায়িত্ব অর্থাৎ পাঠ্যক্রম উন্নয়ন এবং পরিমার্জনের দিকে পূর্ণ মনোযোগ দেওয়া।ফরিদপুরের এই অনুষ্ঠানে ড. সি আর আবরারের করা মন্তব্য শিক্ষা অঙ্গনে আলোচনার ঝড় তুলেছে। এনসিটিবির ভূমিকা এবং কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। শিক্ষাবিদ ও অভিভাবক মহল মনে করছেন, শিক্ষা উপদেষ্টার এই অভিযোগ অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা উচিত এবং এনসিটিবির কর্মপদ্ধতিতে জরুরি পরিবর্তন আনা প্রয়োজন।

বই ছাপানোর দায়িত্ব অন্য কোনো সংস্থার হাতে হস্তান্তর করে এনসিটিবিকে সম্পূর্ণরূপে পাঠ্যক্রম প্রণয়ন এবং তার গুণগত মান নিশ্চিত করার দিকে মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন অনেকে। তা না হলে, একটি মানসম্মত শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার স্বপ্ন অধরাই থেকে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন শিক্ষাবিদরা।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টার এই সরাসরি অভিযোগ নিঃসন্দেহে এনসিটিবির জন্য একটি বড় ধাক্কা। এখন দেখার বিষয়, এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কী পদক্ষেপ নেয়। একটি মানসম্মত শিক্ষা ব্যবস্থার স্বার্থে এনসিটিবির কার্যকারিতা এবং কর্মপদ্ধতির পুনর্বিবেচনা জরুরি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট সকলে।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল   SUBSCRIBE  করতে ক্লিক করুন।

#শিক্ষা উপদেষ্টা #বই #পাঠ্যবই #বাংলাদেশ #অন্তর্বর্তীকালীন সরকার