ইইউ ও এশিয়ার বাজারে রপ্তানি বাড়াতে হবে | বিবিধ নিউজ

ইইউ ও এশিয়ার বাজারে রপ্তানি বাড়াতে হবে

এই অনিশ্চয়তার মধ্যেই বৈশ্বিক অর্থনীতিতে এটি হতে চলেছে সবচেয়ে বড় ইস্যু।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতির মূল লক্ষ্য চীন হলেও, এই দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্ক এখনো অনিশ্চিত। চূড়ান্ত অবস্থা নির্ধারিত হতে আরও সময় লাগবে।

এই অনিশ্চয়তার মধ্যেই বৈশ্বিক অর্থনীতিতে এটি হতে চলেছে সবচেয়ে বড় ইস্যু। এমন পরিস্থিতিতে আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশের উচিত বিকল্প রপ্তানি বাজার খুঁজে বের করা—এমন মন্তব্য করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি)-এর চেয়ারম্যান রেহমান সোবহান।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে সিপিডি আয়োজিত এক সংলাপে তিনি এ কথা বলেন। সংলাপের বিষয় ছিল: ‘ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কে বাংলাদেশের প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া’। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান এবং অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।

রেহমান সোবহান বলেন, বাংলাদেশের প্রতিযোগিতা সক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নে রপ্তানি বাজার আরও সম্প্রসারণের চেষ্টা করা উচিত। কারণ, আগামী কয়েক বছর ওই অঞ্চলে বাংলাদেশের পণ্য শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে। পাশাপাশি কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও জাপানের বাজারে প্রবেশের সুযোগ খুঁজতে হবে।

এশিয়া মহাদেশও আগামী দিনে বিশ্ব অর্থনীতি ও বাণিজ্যের কেন্দ্র হয়ে উঠবে। আগামী ২৫ বছরে এশিয়াই হবে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির মূল ক্ষেত্র। তিনি আরও বলেন, ট্রাম্পের শুল্ক নীতির ফলে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে যে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে, তা থেকে মুক্তি পেতে হবে। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের বৃহত্তম একক রপ্তানি গন্তব্য। সেখানকার অনিশ্চয়তা রপ্তানিনির্ভর অর্থনীতির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। তাই বিকল্প বাজার খুঁজে বের করাটা সময়ের দাবি।

মূল প্রবন্ধে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশ ১৮ কোটি ডলার শুল্ক আদায় করেছে, যেখানে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানিকৃত পণ্যে যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক আদায় করেছে ১২৭ কোটি ডলার।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানিকৃত শীর্ষ তিন পণ্যে শুল্ক শূন্য করলে, অন্যান্য দেশকেও একই সুবিধা দিতে হবে। এতে বাংলাদেশের বার্ষিক শুল্ক রাজস্ব ক্ষতি হবে প্রায় ১৭ কোটি ডলার। তাই শুধু শুল্ক হ্রাস করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব নয়।

বাংলাদেশ ট্যারিফ অ্যান্ড ট্রেড কমিশনের সাবেক সদস্য মোস্তফা আবিদ খান বলেন, এটি পারস্পরিক শুল্ক আরোপ নয়; তাই একতরফা প্রতিক্রিয়ায় তেমন লাভ নেই। আমাদের বোঝার চেষ্টা করতে হবে, যুক্তরাষ্ট্র কী চায়।

এজন্য আলোচনার দরজা খোলা রাখতে হবে। তিনি আরও বলেন, কোনো পণ্যে শুল্ক কমালেই যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বেড়ে যাবে, তা নিশ্চিত নয়। বিকল্প উপায় হিসেবে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করার পরামর্শ দেন। তবে বাস্তবতা হলো, যুক্তরাষ্ট্র এতদিন বাংলাদেশের প্রস্তুতিকে যথেষ্ট মনে করেনি।