যাত্রাটা শুরু হয়েছিল দেশীয় তাঁতের শাড়িকে গ্রাহকদের মাঝে আরো জনপ্রিয় করে তোলার পরিকল্পনা থেকে। ‘ওলো সই’ নামের উদ্যোগটা দুই বন্ধুর। বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকে যে বন্ধুতের শুরু নতুন এই উদ্যোগে সেটিকে ভিন্ন এক মাত্রা দিয়েছে।
সামনে ঈদ, ফলে ঈদ আনন্দের সমারহ ঘটেছে ‘ওলো সই’-এ। উৎসবকে সামনে রেখেই তাঁতের সঙ্গে এখন যুক্ত হয়েছে খাদি, সিল্ক, তন্তুজ, মটকা, তসর, লিনেন, মসলিন, টাঙ্গাইলের এবং মনিপুরী শাড়ি। আরও রয়েছে মনিপুরী ওড়না।
ওলো সই- শোরুম লালমাটিয়াতে। তবে তবে নিজেদের ফেসবুক শপেও ঘটেছে নানান ধরণ আর রুচির শাড়ির সমারহ।
যে দুই বন্ধুর উদ্যোগ সেই ফাহমিদা আখতার ও কাকলী তানভীরের কাছ থেকেই শোনা যাক ঈদ আয়োজন সম্পর্কে। তারা জানান, হ্যান্ডলুম শাড়িই বেশি বিক্রি করেন তারা। তবে চলতি বছরে খাদি, তাঁতের সুতি শাড়ি এবং মনিপুরীর চাহিদাও বেশ ভালো রয়েছে।
অন্যদিকে আগের বছরগুলোতে সূতি, লিনেন ও মটকার চাহিদা বেশি ছিল, বলেন ফাহমিদা। “আমাদের আয়োজনে আমরা আসলে দেশীয় শাড়িকে বেশী গুরুত্ব দিয়েছি। সে কারণে টাঙ্গাইল, রাজশাহী, সিলেট, সিরাজগঞ্জের তাঁতীদের কাছ থেকে মূলত আমরা শাড়ি সোর্স করেছি।”
ওলো সই-এর শাড়ির দরদাম সম্পর্কে কাকলী তানভীর জানান, সুতি শাড়ির দাম পড়বে আড়াই হাজার টাকা থেকে সাড়ে ৮ হাজার টাকা। লিনেন পাঁচ হাজার থেকে শুরু হয়ে আছে সাড়ে দশ হাজার টাকা পর্যন্ত। সিল্ক ও মটকা শাড়ির দাম পড়বে সাড়ে সাত হাজার টাকা থেকে সাড়ে ১৭ হাজার টাকা। সিলেটের মনিপুরী শাড়ির মূল্য মান এক হাজার ৭’শ টাকা থেকে সাড়ে নয় হাজার টাকার মধ্যে।
বসন্ত পেরিয়ে গ্রীষ্মকাল আসি আসি করছে। প্রকৃতিতে তাপমাত্রা একটু একটু করে বাড়ছে। বিশেষ করে বিকেলের আগ পর্যন্ত তাপমাত্রার আধিক্য বেশি থাকে। এই আবহাওয়ায় পোশাকে আরাম নিশ্চিত করাও জরুরি।
আবহাওয়ার এই দিকটার প্রতি লক্ষ্য রেখে ওলো সই-নিয়ে ঈদের আয়োজনে গুরুত্ব দিয়েছে। এবারের ঈদে একটু গরম থাকতে পারে। ফলে খাদি গরমে আরামদায়ক আর তন্তুজ জামদানিতে রয়েছে উৎসবের আমেজ। এ দুটোই এ বছর বেশী যাচ্ছে বলে জানান ফাহমিদা।
তিনি বলেন, ‘‘ঈদের সময়ের আবহাওয়া কেমন থাকতে পারে সেটি বিবেচনায় রেখেছি আমরা। ইদের দিন সকালে খাদি শাড়ি আরাম দেবে। আর বিকালে তন্তুজ জামদানি। ভালো অনুভব দেবে।”
নিজেদের কাজের মাঝে পণ্যেরই প্রসার ঘটাতে চান তারা। দেশীয় তাঁতের শাড়ি সম্প্রসারণে রাখতে চান বিশেষ ভূমিকা।
“আমরা চেষ্টা করছি, দেশীয় তাঁতকে বিশেষ গৌরবময় মোটিফ আর নকশার কারুকাজ দিয়ে ক্রেতাদের কাছে আকর্ষণীয় উপায়ে তুলে ধরতে। আমরা অনলাইনে যেমন সরব, চাইলে লালমাটিয়ার শোরুমে পরখ করে কিনতে পারেন শাড়ি,” বলছিলেন ফাহমিদা।
নিজেদের আয়োজনকে আরো বেশী ক্রেতাদের সামনে তুলে ধরতে ইদানিং বিভিন্ন মেলা এবং উৎসব আয়োজনে নিজেদের পন্য নিয়ে হাজির হচ্ছেন। আর এসবই করছেন, দেশীয় শাড়িকে জনপ্রিয় করার লক্ষ্য থেকে, জানান এই উদ্যোক্তারা।
শোরুমের ঠিকানা: ৩/২ (তৃতীয় তলা), ব্লক ডি, লালমাটিয়া, ঢাকা। ফেসবুক পেইজে অর্ডার করতে চাইলে: https://www.facebook.com/share/1AFQc4ZtNE/