হাবিপ্রবির চার কর্মকর্তা ও এক শিক্ষার্থীকে পুলিশে দিলো বৈষম্যবিরোধীরা | বিশ্ববিদ্যালয় নিউজ

হাবিপ্রবির চার কর্মকর্তা ও এক শিক্ষার্থীকে পুলিশে দিলো বৈষম্যবিরোধীরা

দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত চার কর্মকর্তা ও এক ছাত্রকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতারা। আজ সোমবার বেলা দেড়টায় ওই কর্মকর্তাদের কর্মস্থল থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে পুলিশের হাতে তুলে দেন তাঁরা।

#বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে প্রশাসন ভবন থেকে নিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য নিয়ে যাচ্ছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র নেতারা। সোমবার দুপুরে দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে

দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত চার কর্মকর্তা ও এক ছাত্রকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতারা। আজ সোমবার বেলা দেড়টায় ওই কর্মকর্তাদের কর্মস্থল থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে পুলিশের হাতে তুলে দেন তাঁরা।

এর আগে গতকাল রোববার দিবাগত রাতে জুলাই অভ্যুত্থানে হামলার ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের একটি কক্ষ থেকে রামিম হোসেন নামের এক ছাত্রকে প্রশাসনের হাতে তুলে দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।

পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া কর্মকর্তারা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ড এক্সটেনশন কর্মকর্তা (ফিশারিজ) রাব্বি শেখ, শেখ শাহ আসাদুল্লাহ সালেহীন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা শাহ আলম সিকদার ও সেকশন কর্মকর্তা ইলিয়াস দেওয়ান। তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বিগত কমিটির বিভিন্ন পদে ছিলেন। পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া রামিম হোসেন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কমিটির আহ্বায়ক তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর হয়ে তাঁরা বিভিন্ন পদে চাকরি নিয়েছেন। ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর বিভিন্ন সময়ে সাধারণ শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা তাঁদের ক্যাম্পাসে আসতে নিষেধ করেছেন। কিন্তু তারপরও তাঁরা অফিসে আসছিলেন। আজ সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাঁদের সম্মানের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের কাছে নিয়ে গিয়ে পুলিশ সদস্যদের হাতে তুলে দিয়েছেন।’

শিক্ষার্থী রামিম হোসেনকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার বিষয়ে তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ওই শিক্ষার্থী একটি আবাসিক হলে অবস্থান করছিলেন। হামলার ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার বিভিন্ন ফুটেজ ও ছবিতে বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে ক্যাম্পাসে বিভিন্ন অস্থিতিশীল কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকার বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় রাতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাঁকে আটক করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হাতে তুলে দিয়েছেন।

এদিকে শিক্ষার্থী রামিম হোসেনকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার ঘটনায় আজ বেলা সাড়ে তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এর আগে দুপুর ১২টায় উপাচার্যের কক্ষের সামনের দরজায় অবস্থান নিয়েছিলেন ওই শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর শামসুজ্জোহা বলেন, গতকাল রাতে একটি আবাসিক হলে রামিম হোসেনকে জুলাই অভ্যুত্থানের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আটক করে প্রশাসনকে জানান। রামিম হোসেনের হাতে অস্ত্র–সংবলিত ছবি ও ভিডিও ফুটেজ দেখান। পরে ওই শিক্ষার্থী ছবিটি তাঁর মর্মে স্বীকারও করেন এবং নিজে থেকেই তাঁকে পুলিশের হাতে দেওয়ার কথা জানান। এ ছাড়া দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের চার কর্মকর্তা হামলার ঘটনায় যুক্ত থাকা ও ছাত্রলীগের পদধারী হওয়ায় বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা তাঁদের আটক করে পুলিশের হাতে দিয়েছেন।

দিনাজপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মতিউর রহমান বলেন, ‘সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের চার কর্মকর্তাকে আটক করে আমাদের জানিয়েছেন। আমরা তাঁদের থানায় নিয়ে আসি। তাঁদের প্রত্যেকের নামে থানায় আগের মামলা আছে। জুলাই অভ্যুত্থানের ঘটনায় যুক্ত থাকায় আজ নতুন করে আরও একটি মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি চলছে। মামলার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে তাঁদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।’

#বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন