জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগামে পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলার ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে চার জঙ্গির ছবি প্রকাশ করা হয়েছে, যাদের মধ্যে একজন স্থানীয় বাসিন্দা আদিল। কাশ্মিরের ঐ জঙ্গি হামলায় ২৫ জন পর্যটক ও একজন স্খানীয় বাসিন্দার প্রাণ গেছে। ফলে ভূস্বর্গ এখন হয়ে উঠেছে ভয়ঙ্কর।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, আদিল স্টুডেন্ট ভিসায় কয়েক বছর আগে পাকিস্তান গিয়েছিল এবং ২০২৪ সালে ৪-৫ জন সঙ্গীকে নিয়ে কাশ্মীরে ফিরে আসে। ধারণা করা হচ্ছে, এই দলটিই পহেলগামের নৃশংস হামলায় জড়িত।প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, আদিল ২০১৮ সালে পাকিস্তান যায় এবং সেখানে প্রায় ছয় বছর অবস্থান করে। ২০২৪ সালে যখন সে কাশ্মীরে ফেরে, তখন তার সঙ্গে আরও ৪-৫ জন ছিল।
গোয়েন্দাদের অনুমান, এই সঙ্গীরা লস্কর-ই-তইবার ছায়া সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্ট ফ্রন্ট (টিআরএফ)-এর সদস্য হতে পারে। তবে অন্য একটি সূত্র বলছে, তারা টিআরএফ নয়, বরং পাকিস্তানের অন্য কোনো জঙ্গি সংগঠনের সদস্য।
কারণ, আদিলের গ্রামে জিজ্ঞাসাবাদ করে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন যে দেশ ছাড়ার আগেই তার মধ্যে জঙ্গি মনোভাবের উন্মেষ ঘটেছিল।
পাকিস্তান যাওয়ার পর প্রথম ছয় মাস আদিল তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখলেও, ধীরে ধীরে সেই সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়। প্রায় আট মাস তার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
ধারণা করা হচ্ছে, এই সময়কালেই সে কোনো জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয় এবং প্রশিক্ষণ নেওয়া থেকে শুরু করে সংগঠনের বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশ নেয়। ছয় বছর পর, আদিল ৪-৫ জন জঙ্গিকে সঙ্গে নিয়ে কাশ্মীরে ফিরে আসে। এদের মধ্যে একজন পাকিস্তানি জঙ্গি রয়েছে, যার নাম হাশিম মুশা এবং মনে করা হচ্ছে সে পহেলগাম হামলায় সরাসরি জড়িত।
এদিকে, নিরীহ পর্যটকদের হত্যার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত লস্কর-ই-তইবার জঙ্গি আসিফ শেখ ও আদিল হুসেন ঠোকারের বাড়ি ভারতীয় সেনা বৃহস্পতিবার রাতেই গুঁড়িয়ে দিয়েছে।
এরপর আরও তিন লস্কর জঙ্গির বাড়ি ধ্বংস করা হয়েছে। একইসঙ্গে, জঙ্গিদের সাহায্য করার অভিযোগে কুলগামের কাইমো এলাকার ঠোকরপোরা থেকে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ভারতীয় সেনার পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে জানানো হয়েছে যে, শুধু জঙ্গিদের বাড়ি ধ্বংস করাই তাদের প্রধান উদ্দেশ্য নয়, বরং তাদের গ্রেফতার করাই মূল লক্ষ্য এবং সেই লক্ষ্যে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এই ঘটনায় আদিলের পাকিস্তান যাওয়া, দীর্ঘ সময় সেখানে থাকা এবং সঙ্গীদের নিয়ে ফিরে এসে হামলায় জড়িত থাকার বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগের। গোয়েন্দারা এখন এই দলের অন্যান্য সদস্যদের পরিচয় এবং তাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছেন।