ফেসবুকে পোস্ট দেওয়াকে কেন্দ্র করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত এক শিক্ষার্থীকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সহ-সমন্বয়ক সায়েম আহমেদের বিরুদ্ধে। সায়েম আল ফিকহ এন্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। অভিযোগকারী বাঁধন বিশ্বাস স্পর্শ সমাজকল্যাণ বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
এ ঘটনায় সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলামের কাছে অভিযোগ দেন বাঁধন। অভিযোগে তিনি বলেন, ‘গত ২২ তারিখ (বুধবার) আমার একটি ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে সায়েম আহমেদ হুমকি দিয়েছেন। তাই আমার জীবন এখন ঝুঁকিতে আছে। উক্ত ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে উক্ত ব্যক্তিকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই।’
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, কুয়েটে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রদলের হামলার প্রতিবাদে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ইবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সমাবেশে বক্তব্যে কয়েকজন সহ সমন্বয়ক হামলার বিষয়ে ছাত্রদলের নাম বলেননি। এই নিয়ে ফেসবুকে নিজ টাইমলাইনে পোস্ট দেন বাঁধন।
এতে তিনি লিখেন, তা বড় ভাইয়েরা, আপনাদের চোর বলার কারণ একটু বিস্তারিতভাবে বুঝিয়ে বলি! গত পরশুদিন কুয়েটে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রদলের সন্ত্রাসীদের নৃশংস আক্রমণের প্রতিবাদে আমাদের ইবি ক্যাম্পাসে তৎক্ষণাৎ বিক্ষোভ মিছিল হয়। উক্ত মিছিলের ব্রিফিংয়ে শুধু সুইট ভাই ছাত্রদলের নাম উচ্চারণ করেছিলেন, আপনারা কেউ কিন্তু করেননি। কারণ আপনারা সকল স্থানে সুবিধা নিয়ে চলতে চান। সত্যকে সত্য বলার মানসিকতা থাকতে হবে বড় ভাইয়েরা (ও সরি চোর বড় ভাইয়েরা)।’
এই পোস্টের জেরে ২২ ফেব্রুয়ারি বাঁধনকে শেখ রাসেল হলের সামনে ডেকে নেন সহ-সমন্বয়ক সায়েম। এসময় তিনি বাঁধনকে হুমকি-ধামকি দেন বলে অভিযোগ বাঁধনের।
ভুক্তভোগী বাঁধন বিশ্বাস বলেন, আমি ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ায় সায়েম ভাই আমাকে ডেকে হুমকি দিয়েছেন। আমার পরীক্ষা আছে বললেও আমাকে ছাড়েনি। আধা ঘণ্টা ধরে বিভিন্ন ধরনের কথাবার্তা বলেছে। এই নিয়ে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে এর বিচার চাই।
এ বিষয়ে সহ-সমন্বয়ক সায়েম আহমেদ বলেন, আমাদের সংগঠনের সিদ্ধান্ত ছিল যে, আমরা ছাত্রদলের নাম উল্লেখ করবো না। কিন্তু পরে সুইট ভাই বিভিন্ন কারণে ছাত্রদলের নাম উল্লেখ করছে। যারা ছাত্রদলের নাম বলেনি বাঁধন তাদের চোর বলেছে। তাই এ বিষয়ে ওর সাথে আমরা কথা বলেছি। ও যেহেতু নিরাপত্তা শঙ্কার অভিযোগ দিয়েছে। ছাত্র উপদেষ্টা আমাদের ডাকলে আমরা তার সাথে এ বিষয়ে বসবো।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মুখলেসুর রহমান সুইট বলেন, আমি বিষয়টি এখনো পুরোপুরি জানি না। তবে অভিযোগ যেহেতু দিয়েছে তাই প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত নিলে আমরা সহযোগিতা করবো। সে যদি সত্যি দোষী হয় তাহলে আমরা সাংগঠনিকভাবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো। কারণ সবাই আন্দোলন করেছে। কোন আন্দোলনকারীর সাথে কেউ খারাপ ব্যবহার করতে পারে না।
ছাত্র-উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম বলেন, আমি শুনেছি এমন একটি অভিযোগ অফিসে দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ পত্রটি আমি এখনো দেখিনি। আজ মঙ্গলবার অফিসে গিয়ে অভিযোগটি দেখে এ বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিবো।
প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহিনুজ্জামান বলেন, এ বিষয়ে বাঁধনের সাথে আমার আগে কথা হয়েছে। অভিযোগ আগে দেখি, তারপরে কি করা যায় সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবো।