অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার খামারকান্দি ইউনিয়নের রামেশ্বরপুর শামছুল উলুম বালিকা দাখিল মাদরাসার সুপারের অফিস কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন স্থানীয়রা।
গত ২০ এপ্রিল থেকে মাদরাসার সুপার আবদুল হাকিমের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সুপার নিজেও।
মাদরাসা পরিচালনা কমিটির অভিভাবক সদস্য শাজাহান আলী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে এ মাদরাসায় দুটি পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই স্থানীয়রা এ নিয়ে প্রতিবাদ করে আসছিলেন। তারা একত্র হয়ে সুপারের অফিস কক্ষে তালা দেন।
রামেশ্বরপুর এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, মাদরাসার সুপার আবদুল হাকিম অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িত। একজন নারী আয়া ও একজন পুরুষ নিরাপত্তাকর্মীর পদে টাকার বিনিময়ে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠান উন্নয়নের নামে অর্থ আদায় করা হলেও সেই টাকা হিসাব অনুযায়ী জমা রাখা হয়নি। এসব ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা। বিষয়টি লিখিতভাবে জানানো হয়েছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার দপ্তরে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আবদুল হাকিম বলেন, বিগত সরকারের সময় প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ছিলেন শুভ ইমরান। তিনি শেরপুর পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তার নেতৃত্বে নিয়োগপ্রক্রিয়া পরিচালিত হয়। ১৭ জন প্রার্থী আবেদন করলেও দুই পদে টাকা নিয়ে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। কত টাকা নেওয়া হয়েছিল, তা আমি জানি না। তবে ওই নিয়োগের মাধ্যমে কমিটি প্রায় তিন লাখ টাকার উন্নয়নকাজ করেছিল।
মাদরাসা সুপার আরও বলেন, এই নিয়োগ নিয়ে গত বছরের ডিসেম্বর থেকে স্থানীয়রা প্রতিবাদ জানাচ্ছেন এবং আমাকেও অভিযুক্ত করছেন। তবে আমি দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নই। বর্তমানে অফিস কক্ষ তালাবদ্ধ থাকায় আমি কাজ করতে পারছি না।
এ বিষয়ে জানতে শুভ ইমরানের সঙ্গে কথা বলতে সোমবার বিকেলে তার মোবাইলে কল করেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। জানা গেছে, জুলাই আন্দোলনের পর থেকে তিনি পলাতক।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা মিললে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশিক খান বলেন, প্রায় দুই মাস আগে মাদরাসা সুপারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি কার্যক্রম শুরু করেছে। আগামী সপ্তাহের মধ্য প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির তালা খুলে দেওয়ার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হবে।