একটি শূন্যপদের জন্য একাধিক আবেদন পাওয়া গেলে জ্যেষ্ঠতা, নারী, দূরত্ব বিবেচনা করা হবে। এমন বিধান রেখে স্বয়ংক্রিয় সফটওয়্যারের মাধ্যমে বেসরকারি মাদরাসায় কর্মরত বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) সুপারিশপ্রাপ্ত এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি নীতিমালা জারি করা হয়েছে।
সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের ওয়েবসাইটে এ নীতিমালা প্রকাশ করা হয়।
এ নীতিমালায় বলা হয়েছে, এনটিআরসিএর সুপারিশপ্রাপ্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বেসরকারি মাদরাসা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বদলির ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন। বদলি কার্যক্রম স্বয়ংক্রিয় সফটওয়ারের মাধ্যমে একটি নীতিমালার আওতায় বাস্তবায়ন হওয়া প্রয়োজন। তাই, বেসরকারি মাদরাসায় প্রতিষ্ঠানে কর্মরত এনটিআরসিএ সুপারিশপ্রাপ্ত এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য নিম্নোক্ত বদলি নীতিমালা-২০২৪ প্রণয়ন করা হলো।
বদলির সাধারণ শর্তাবলিতে বলা হয়েছে, এনটিআরসিএর প্রতিষ্ঠানভিত্তিক শূন্যপদের চাহিদা-বিবরণ ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে অনলাইনে প্রকাশ করবে।
প্রকাশিত শূন্যপদের বিপরীতে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর বদলির আবেদন আহ্বান করবে। সমপদে পদ শূন্য থাকা সাপেক্ষে, বদলির জন্য ১ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবরের মধ্যে অনলাইনে আবেদন করতে পারবে। ৩০ নভেম্বরের মধ্যে বদলির আদেশ জারি হবে। ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে নতুন কর্মস্থলে যোগদান সম্পন্ন হবে।
আবেদনকারী শিক্ষক-শিক্ষিকা তার চাকরির আবেদনে উল্লেখ করা নিজ জেলায় বদলির জন্য আবেদন করবেন। তবে নিজ জেলায় পদ শূন্য না থাকলে, নিজ বিভাগের যেকোনো জেলায় থাকা শূন্যপদের বিপরীতে বদলির আবেদন করতে পারবেন।
প্রথম যোগদানের পর চাকরি দুই বছর পূর্ণ হলে বদলির আবেদন করার জন্য যোগ্য হবেন। বদলি হয়ে নতুন কর্মস্থলে যোগদানের পর ন্যূনতম দুই বছর কর্মে নিয়োজিত থাকার পর পরবর্তী বদলির জন্য আবেদন করতে পারবেন।
একজন শিক্ষক কর্মজীবনে সর্বোচ্চ দুই বার বদলি হওয়ার সুযোগ পাবেন। তবে একজন শিক্ষিকা কর্মজীবনে সর্বোচ্চ তিনবার বদলির সুযোগ পাবেন। একটি শূন্যপদের জন্য একাধিক আবেদন পাওয়া গেলে জ্যেষ্ঠতা, নারী, দূরত্ব বিবেচনা করা হবে।
চাকরিতে প্রথম যোগদানের তারিখ থেকে সিনিয়রিটি গণনা করা হবে। একটি পদের জন্য প্রতিযোগী সব আবেদনকারী কর্মস্থল একই উপজেলায় হলে তাদের কর্মস্থল উপজেলার কেন্দ্র হতে কাঙ্ক্ষিত উপজেলার কেন্দ্রের দূরত্ব গণনা করে সবার জন্য প্রযোজ্য হবে।
একটি পদের জন্য প্রতিযোগী আবেদনকারী বিভিন্ন উপজেলার হলে তাদের কর্মস্থল জেলার কেন্দ্র হতে কাঙ্ক্ষিত জেলার কেন্দ্রের দূরত্ব গণনা করে সবার জন্য করতে হবে।
একটি পদের জন্য প্রতিযোগী আবেদনকারী বিভিন্ন জেলার হলে তাদের স্ব-স্ব জেলার কেন্দ্র থেকে কাঙ্ক্ষিত জেলার কেন্দ্রের দূরত্ব গণনা করতে হবে। দূরত্ব পরিমাপের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মডেল অনুসরণ করা হবে।
অসম্পূর্ণ বা ভুল তথ্য সম্বলিত আবেদন বিবেচনাযোগ্য হবে না। ইচ্ছাকৃত ভুল প্রমাণিত হলে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। বদলির কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ার পর এনটিআরসিএ অবশিষ্ট শূন্যপদে নিয়োগের সুপারিশ চূড়ান্ত করবে। একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বছরে ১ জন শিক্ষক বদলির সুযোগ পাবেন।
বদলির কর্তৃপক্ষ সম্পর্কে বলা হয়েছে, মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বদলির আবেদন নিষ্পত্তি করবেন।
আবেদন নিষ্পত্তি প্রক্রিয়া: বদলির সমগ্র প্রক্রিয়া সফটওয়্যারের মাধ্যমে সম্পন্ন হবে। মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর সফটওয়্যার তৈরি ও অনলাইন আবেদনের ফরমেট নির্ধারণ করবে। বদলি করা শিক্ষকের ইনডেক্স আগের প্রতিষ্ঠান থেকে বদলি করা প্রতিষ্ঠানে অন-লাইনে ট্রান্সফার হবে।
পারস্পারিক বদলির ক্ষেত্রে লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ বদলি-পদায়নের বিষয়টি নিষ্পন্ন করতে পারবেন। বদলি করা শিক্ষকের এমপিও ও অন্যান্য আর্থিক সুবিধা এবং জ্যেষ্ঠতার ধারাবাহিকতা আগের মতো বজায় থাকবে।
এ ছাড়াও নীতিমালায় বলা হয়েছে, বদলির আবেদন অধিকার হিসাবে দাবি করা যাবে না। বদলিকৃত শিক্ষক কোনো ধরনের টিএ-ডিএ ভাতা পাবেন না। আদেশ জারির ১০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান বদলি কার শিক্ষকের অবমুক্তি নিশ্চিত করবেন।
অবমুক্ত হওয়ার পরবর্তী ১০ দিনের মধ্যে নতুন কর্মস্থলে যোগদান করতে হবে। সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান যোগদানের তথ্য বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) চেয়ারম্যান ও মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে অনলাইনে অবহিত করবেন। অবমুক্তি হতে যোগদান পর্যন্ত দিবসগুলো কর্মকাল হিসেবে গণ্য হবে।