বাবার মরদেহ বাড়িতে রেখে পরীক্ষার হলে মনীষা! | পরীক্ষা নিউজ

বাবার মরদেহ বাড়িতে রেখে পরীক্ষার হলে মনীষা!

নিহত সাংবাদিক নির্ঝর কান্তি বিশ্বাস ননী ‘দৈনিক খোলাকাগজ’ পত্রিকার বামনা উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এর পাশাপাশি তিনি বামনা উপজেলা সদরে ‘বন্ধুজন মোবাইল সেন্টার’ নামে একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতেন।

#শিক্ষার্থী

সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত বাবার মরদেহ বাড়িতে রেখে ডিগ্রি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন মনীষা রানী বিশ্বাস।

বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বরগুনার বামনায় বামনা সরকারি কলেজ কেন্দ্রে গার্হস্থ্য অর্থনীতি বিষয়ে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন তিনি।

পরে পরীক্ষা শেষে স্বজনদের সঙ্গে বাবার অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়ায় অংশ নেন মনীষা। নিহত সাংবাদিক নির্ঝর কান্তি বিশ্বাস ননী ‘দৈনিক খোলাকাগজ’ পত্রিকার বামনা উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এর পাশাপাশি তিনি বামনা উপজেলা সদরে ‘বন্ধুজন মোবাইল সেন্টার’ নামে একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতেন।

মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বাড়ি থেকে ব্যবসার কাজে মোটরসাইকেলে করে যাওয়ার সময় শহরের কলেজ রোডের ভেন্টার বাড়ি এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি পুলিশের পিকআপভ্যানের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে।

এতে সাংবাদিক নির্ঝর কান্তি বিশ্বাস ননীর মোটরসাইকেলটি ধুমড়েমুচড়ে যায় এবং তিনি মাথা ও পায়ে আঘাত পেয়ে গুরুতর আহত হন।

স্থানীয়রা উদ্ধার করে প্রথমে তাকে বামনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে দেন। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য নির্ঝর কান্তি বিশ্বাসকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ও নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টার দিকে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নির্ঝর কান্তি বিশ্বাস ননীর পরিবারে শোকের মাতম চলছে।

নিহতের পরিবারের সদস্যদের শোক জানাতে পাথরঘাটা, মঠবাড়িয়া, মির্জাগঞ্জ, আমতলী, বরগুনা, পটুয়াখালী থেকে সাংবাদিকেরা ছুটে আসেন।

এ বিষয়ে বামনা প্রেসক্লাব সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক! নিহত সাংবাদিক পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তার দুই মেয়ে সন্তান রয়েছে। বাবাকে হারিয়ে তারা অসহায় হয়ে পড়েছেন। নিহত সাংবাদিকের স্ত্রী সুবর্ণা বিশ্বাস স্বামীকে হারিয়ে এখন পাগলপ্রায়! স্বামীর মরদেহের পাশে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন তিনি।

বেগম ফায়জুন্নেসা মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মো. হাবিবুর রহমান বলেন, মনীষা বিশ্বাস আমার কলেজ থেকে এ বছর স্নাতক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে। বাবার অকাল মৃত্যুতেও তার পরীক্ষায় অংশগ্রহণ থেমে নেই। এমন মর্মান্তিক ঘটনায় আমরা খুবই শোকাহত!

#শিক্ষার্থী