বেরোবিতে মাতৃভাষা দিবস পালিত | বিশ্ববিদ্যালয় নিউজ

বেরোবিতে মাতৃভাষা দিবস পালিত

কবি আবদুল হাই শিকদার বলেন, ভাষা আন্দোলনের অনেক ইতিহাস চাপা পড়ে আছে। জুলাই বিপ্লবের পর কথা বলার স্বাধীনতা ফিরে এসেছে। এখন সে সব চাপা পড়া সব ইতিহাসকে উন্মোচিত করতে হবে। তিনি বলেন, আবু সাঈদ বীরের মতো সব গুলি বুকে ধারণ করার দৃশ্য এক হাজার বছরের বাংলার ইতিহাসে কেউ দেখেনি।

রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে শুক্রবার সকালে বাংলা ভাষার জন্য অকাতরে প্রাণ বিলিয়ে দেয়া ভাষা-শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শোক র‌্যালির উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শওকাত আলী। শোক র‌্যালিতে বিভিন্ন অনুষদ, বিভাগ ও দপ্তরের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারী অংশ নেন।

শোক র‌্যালিটি প্রশাসনিক ভবনের দক্ষিণ গেট থেকে শুরু হয়ে পার্কের মোড় (আবু সাঈদ চত্বর) ঘুরে ক্যাম্পাসের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহীদ মিনার চত্বরে এসে শেষ হয়। এরপর শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শওকাত আলী। এ সময় বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন বিভাগ, আবাসিক হল, ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হয়।

মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বিকেলে স্বাধীনতা স্মারক মাঠে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন কবি ও সিনিয়র সাংবাদিক আবদুল হাই শিকদার। বক্তব্যে কবি আবদুল হাই শিকদার বলেন, ভাষা আন্দোলনের অনেক ইতিহাস চাপা পড়ে আছে। জুলাই বিপ্লবের পর কথা বলার স্বাধীনতা ফিরে এসেছে। এখন সে সব চাপা পড়া সব ইতিহাসকে উন্মোচিত করতে হবে। তিনি বলেন, আবু সাঈদ বীরের মতো সব গুলি বুকে ধারণ করার দৃশ্য এক হাজার বছরের বাংলার ইতিহাসে কেউ দেখেনি। সংগ্রামী ছাত্র-জনতার এই স্পিরিটকে কোনোভাবেই নষ্ট হতে দেয়া যাবে না। ছাত্রদের সঠিক রাস্তায় রেখে দেশকে সাজাতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান কবি আবদুল হাই শিকদার।

বিশেষ অতিথি ছিলেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আব্দুল লতিফ মাছুম বলেন, ২৪ এর নতুন স্বাধীনতা গোটা জাতিকে নতুন স্বপ্ন দেখাচ্ছে। নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন এগিয়ে নেয়া প্রত্যেক নাগরিকের কর্তব্য।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শওকাত আলী। সমাপনী বক্তব্যে উপাচার্য বাংলা ভাষার জন্য জীবন বিসর্জন দেয়া ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। তিনি বলেন, মহান ভাষা আন্দোলনের চেতনা ও সাহস ২৪ এর বিপ্লবে শক্তি ও প্রেরণা জুগিয়েছে।

এর আগে দিবসটি উপলক্ষে একুশের প্রথম প্রহরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে শহিদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মো. শওকাত আলী। ভোরে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে কালোব্যাজ ধারণ ও জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করা হয়। এছাড়াও বাদ আসর কেন্দ্রীয় মসজিদে মহান ভাষা আন্দোলনে শহিদদের আত্মার শান্তি কামনা করে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।