নেত্রকোনার ৭৭৭ প্রাথমিকে নেই শহীদ মিনার! | স্কুল নিউজ

নেত্রকোনার ৭৭৭ প্রাথমিকে নেই শহীদ মিনার!

তবে কোথাও কোথাও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইট, কাঠ, কলাগাছ দিয়ে প্রতীকী শহীদ মিনার তৈরি করে অনাড়ম্বর পরিবেশে ভাষা শহীদদের প্রতি জানানো হয় শ্রদ্ধা। ফলে মূল শহীদ মিনার না থাকায় এসব প্রতিষ্ঠানের শিশু শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছেন ভাষা দিবসের অনেক কর্মসূচি থেকে।

#শহীদ মিনার

শহীদ মিনার চত্বরে ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দের ভাষা আন্দোলনে বীর শহীদদের স্মরণে শ্রদ্ধা জানাবেন শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষরা।

অথচ নেত্রকোনার ১০ উপজেলার এক হাজার ৩শ ১৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৭শ ৭৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এখনো নির্মাণ হয়নি কোনো শহীদ মিনার। ফলে এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা শহীদদের স্মরণে শ্রদ্ধা জানানোর কোনো সুযোগ পান না।

তবে কোথাও কোথাও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইট, কাঠ, কলাগাছ দিয়ে প্রতীকী শহীদ মিনার তৈরি করে অনাড়ম্বর পরিবেশে ভাষা শহীদদের প্রতি জানানো হয় শ্রদ্ধা। ফলে মূল শহীদ মিনার না থাকায় এসব প্রতিষ্ঠানের শিশু শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছেন ভাষা দিবসের অনেক কর্মসূচি থেকে।

নেত্রকোনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, অনেক প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হলেও শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়নি। এর কারণ হিসেবে জানা গেছে, কোনো কোনো বিদ্যালয়ে স্থানের অভাবে শহীদ মিনার নির্মাণ করা যায়নি।

খালিয়াজুরীর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এ উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ৬৩টি। এর মধ্যে শহীদ মিনার আছে মাত্র ১২টিতে। বাঘাটিয়া, আদমপুর, কাদিরপুর, গছিখাই গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ৫১টিতেই কোনো শহীদ মিনার নেই।

সরেজমিন জানা গেছে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার না থাকার কারণ হিসেবে স্থানের অভাবে কিংবা উদ্যোগ না নেয়ার জন্য বিদ্যালয়গুলোতে শহীদ মিনার নির্মাণের অর্থ বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে না। তবে কোনো কোনো বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও পরিচালনা পর্ষদ স্থানীয় ধনাঢ্য ব্যক্তি বা জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে বরাদ্দ নিয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ করেছেন।

বারহাট্টার রূপগঞ্জে অবস্থিত বাউসী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বিবেক চন্দ্র সাহা বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই। বাধ্য হয়ে একুশে ফেব্রুয়ারিতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের পার্শ্ববর্তী বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের বেদিতে শহীদদের স্মরণে শ্রদ্ধা জানাতে হয়। শহীদ মিনার নির্মাণ করার মতো স্থানও নেই।

বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের জেলা কমিটির সভাপতি শামীম তালুকদার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থীদের ভাষা আন্দোলনের একুশের চেতনায় সমৃদ্ধ করতে প্রতিটি বিদ্যালয়েই শহীদ মিনার নির্মাণ একান্ত প্রয়োজন। তা নাহলে এসব শিক্ষার্থী একদিন একুশের ভাষা আন্দোলনের কথা ভুলে যাবেন।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহীদুল আজম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, যেসব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে স্থান নেই, ইচ্ছে থাকলেও শহীদ মিনার নির্মাণ সম্ভব হয় না আবার কিছু বিদ্যালয় আছে কর্তৃপক্ষ অন্য সমস্যার কথা বললেও শহীদ মিনার নির্মাণের প্রয়োজন অনুভব করেন না। তবে জেলার শহীদ মিনারশূন্য বিদ্যালয় শনাক্ত করে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

#শহীদ মিনার