অষ্টাদশ শিক্ষক নিবন্ধনের ষষ্ঠ ধাপের ভাইভা চলছে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা বেসরকারি শিক্ষক পদে চাকরিপ্রত্যাশীরা প্রতিদিনই মুখোমুখি হচ্ছেন ভাইভা বোর্ডের। কী প্রশ্ন করা হচ্ছে তাদের, তারাই বা কী উত্তর দিচ্ছেন। তাদের অভিজ্ঞতা অবশ্যই সহায়ক হবে ভাইভা বোর্ডের মুখোমুখি হওয়ার অপেক্ষায় থাকা প্রার্থীদের। তাই দেশের শিক্ষাবিষয়ক একমাত্র প্রিন্ট জাতীয় পত্রিকা দৈনিক আমাদের বার্তার এই বিশেষ আয়োজন। ভাইভা বোর্ড ফেস করা প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নিয়ে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন সাবিহা সুমি।
আব্দুর রহমান, দিনাজপুর
ভাইভা বোর্ড প্রথম জানতে চেয়েছিলো, আল্লাহর গুণবাচক নাম কয়টি এবং কয়েকটি নাম। আরবি একটি শব্দ বলে তারকিব করতে বলা হয়। এরপর জিজ্ঞেস করেছে, ’টুপির আরবি কী? আমার মাথার ওপর একটি টুপি আছে, একটি নতুন বই’-বাক্যগুলোর আরবি জানতে চেয়েছেন। সবশেষে একটি আরবি কবিতা বলতে বলেন।
মো. শরিফুল ইসলাম, যশোর
আমাকে প্রশ্ন করা হয়েছে, ‘আমি ফাজিল পাস করেছি’-এর আরবি বলুন। ‘আমি মনিরামপুর থেকে এসেছি’-এর আরবি বলুন। কুরআনের শেষ সুরা কোনটি? শেষ সুরার অর্থসহ অনুবাদ করতে বলা হয়েছে। হাদিস কতো প্রকার?
মামুনুর রশিদ, যশোর
সহকারী মৌলভী পদে ভাইভা দিয়েছি। আমাকে প্রথমে জিজ্ঞেস করা হয়েছে, অনার্স নাকি ফাজিল করেছি? আমি বাড়ি যেতে চাই-এর আরবি অনুবাদ কী? অনার্স শেষ করেছি-এর আরবি কী? সবশেষে প্রাণী সম্পর্কিত একটি হাদিস বলতে বলা হয়েছে।
ইসমাইল হোসেন, জামালপুর
আমাকে সূরা ফাতিহার অনুবাদ করতে বললেন। মালিকি ইয়াউমিদ্দীন-এর তারকিব করতে বললেন। ‘ইয়া কানা বুদু ওয়া ইয়া কানাস্তাইন’-এর অর্থ বলতে বলেছেন। ফেলে মুজারের কাকে বলে এবং এর গর্দানগুলো বলতে বললেন।
রোকসানা আক্তার, দিনাজপুর
ভাইভা বোর্ড প্রথমে জিজ্ঞেস করেছেন, ‘জালিকাল কিতাবু লা রাইবা ফিহি হুদাল্লিল মুত্তাকিন’ এর অর্থ কী? এরপর আমাকে জিজ্ঞেস করেছে, মুত্তাকিন কোন সিগা? সবশেষে ’আমর হাযের মারুফের’ গঠন বলতে বললেন।
ভাইভার ৮৩তম দিনে মোট দশটি বোর্ডে দুই ব্যাচে অংশ নেন চাকরিপ্রার্থীরা। এদিন স্কুল পর্যায়ের মৌলভী পদের পরীক্ষা ছিলো। প্রথম ব্যাচের পরীক্ষা সকাল সাড়ে ৯টায় ও দ্বিতীয় ব্যাচের পরীক্ষা বেলা সাড়ে ১১টায় শুরু হয়।
গতকাল বুধবার ৩৩০০২০৭৯৮ থেকে ৩৩০০২৭৫৮৫ রোল নম্বরধারীদের মধ্যে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা অংশ নেন। ৮৩তম দিনে মোট ৬০০ জন প্রার্থীর ভাইভা নেয়া হয়।
আজ বৃহস্পতিবার ৩৩০০২৭৬০১ থেকে ৩৩০০৩২৪৩২ রোল নম্বরধারীদের মধ্যে ভাইভা অনুষ্ঠিত হবে। গত ১৬ ফ্রেরুয়ারি থেকে ষষ্ঠ ধাপের এই ভাইভা শুরু হয়েছে। এ ধাপের ভাইভা চলবে ৬ মার্চ পর্যন্ত। গত ২৬ জানুয়ারি পঞ্চম ধাপের ভাইভা শুরু হয়ে চলে ১৩ ফ্রেরুয়ারি পর্যন্ত। এর আগে গত ৫ জানুয়ারি থেকে চতুর্থ ধাপের এই ভাইভা শুরু হয়ে শেষ হয় ২৩ জানুয়ারি।
এর আগে তৃতীয় ধাপের ভাইভা পরীক্ষা ৫ ডিসেম্বর শুরু হয়ে ২ জানুয়ারি পর্যন্ত চলে। ১৪ নভেম্বর দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষা শুরু হয়, যা শেষ হয়েছে ৪ ডিসেম্বর।
এর আগে গত ২৭ অক্টোবর প্রথম ধাপের ভাইভা শুরু হয় এবং ১৩ নভেম্বর প্রথম ধাপের ভাইভা শেষ হয়।
পর্যায়ক্রমে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ মোট ৮৩ হাজার ৮৬৫ জন প্রার্থী ভাইভায় অংশ নেয়ার সুযোগ পাবেন। ভাইভায় অংশগ্রহণের জন্য লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীকে অবশ্যই সব শিক্ষা সনদ ও ট্রান্সক্রিপ্ট, এনআইডি অথবা জন্ম নিবন্ধন সনদ ও লিখিত পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড সঙ্গে আনতে হবে। যেহেতু এবার ভাইভার জন্য আলাদা প্রবেশপত্র দেয়া হয়নি, তাই লিখিত পরীক্ষার প্রবেশপত্রই মৌখিক পরীক্ষার প্রবেশপত্র হিসেবে গণ্য হবে।
এর আগে গত বছরের ২২ অক্টোবর বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) এক বিজ্ঞপ্তিতে মৌখিক পরীক্ষা শুরুর তারিখ জানানো হয়। গত ১৪ অক্টোবর অষ্টাদশ শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ করে এনটিআরসিএ। গড় পাসের হার ছিলো ২৪ শতাংশ।
তার আগে গত বছরের ১৫ মে ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। তাতে গড় পাসের হার ছিলো ৩৫ দশমিক ৮০ শতাংশ। স্কুল ও কলেজ পর্যায় মিলিয়ে মোট পাস করেন চার লাখ ৭৯ হাজার ৯৮১ জন চাকরিপ্রার্থী। গত ১৫ মার্চ অনুষ্ঠিত প্রিলিমিনারিতে ১৮ লাখ ৬৫ হাজার ৭১৯ জন আবেদন করলেও পরীক্ষায় অংশ নেন ১৩ লাখ ৪০ হাজার।