জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের ৩০ শতাংশ প্রমোশন কোটা বাতিল করাসহ ছয় দফা দাবিতে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে সড়ক অবরোধ করেছেন পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে শিক্ষার্থীরা সাতরাস্তা মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এই প্রতিবেদনটি লেখার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত অবরোধ চলমান আছে। শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধের ফলে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ।
সড়ক অবরোধ করে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত করে তুলেছে আশপাশের এলাকা। তবে এর মাঝে কিছু ভিন্ন চিত্রও দেখা যায়। শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ রাস্তায় বসে খোশগল্প করছেন, আবার দেখা যায় একদল শিক্ষার্থী ফাঁকা সড়কে ক্রিকেট খেলছে।
অবরোধের মধ্যে ক্রিকেট খেলা এক শিক্ষার্থী হৃদয় বলেন, তপ্ত দুপুরে আন্দোলন শুরু করেছি। স্লোগান দিতে দিতে আমরা ক্লান্ত। তাই কেউ ছায়ায় বসে সময় পার করছেন, আবার কেউ ক্রিকেট খেলে।
শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবিগুলো হলো—জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের ৩০ শতাংশ প্রমোশন কোটা অবিলম্বে বাতিল করতে হবে, জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর (টেক) পদের শিক্ষাগত যোগ্যতা বাধ্যতামূলক ডিপ্লোমা প্রকৌশল ডিগ্রি থাকতে হবে, ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরসহ দেশের কারিগরি সব পদে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল নিয়োগ দিতে হবে, কারিগরি (পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ছাত্রদের জন্য) সব বিভাগীয় শহরগুলোতে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করতে হবে, কারিগরি শিক্ষা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কারিগরি শিক্ষা চালু ও শিক্ষক পদে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের চাকরির আবেদনের সুযোগ বাস্তবায়ন করতে হবে এবং ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের জন্য প্রাইভেট সেক্টরে সর্বনিম্ন বেতন স্কেল নির্ধারণ করে দিতে হবে।
সম্প্রতি কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানকে দেওয়া দাবি পূরণের স্মারকলিপিতে বলা হয়, বাংলাদেশের বিভিন্ন বেসরকারি পলিটেকনিকে যথেষ্ট ল্যাব সুবিধা নেই, যার ফলে বেসরকারি পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীরা দক্ষতা অর্জনে ব্যর্থ হন। এই সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে বেসরকারি পলিটেকনিকসমূহের ল্যাব সুবিধা বৃদ্ধির ব্যবস্থা করতে হবে এবং যেসব বেসরকারি পলিটেকনিক ল্যাব সুবিধা প্রদানে ব্যর্থ হবে তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা করতে হবে।
বাংলাদেশের বিভিন্ন বেসরকারি পলিটেকনিক মাত্রাতিরিক্ত অর্থ আদায় করে এবং কোনো শিক্ষার্থী অর্থ প্রদানে ব্যর্থ হলে নানা রকম হয়রানির শিকার হন। তাই এসব অতিরিক্ত অর্থ আদায় নিয়ন্ত্রণসহ বেসরকারি পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের নানা হয়রানির বিষয়ে বোর্ড কর্তৃক যৌক্তিক পদক্ষেপ নিতে হবে।
বাংলাদেশের সরকারি পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীরা ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাটাচমেন্ট বাবদ যেসব অর্থ পেয়ে থাকেন তা বেসরকারি পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীরা পাচ্ছেন না। বেসরকারি পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে এই বৈষম্য দূর করতে হবে।