কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের | কারিগরি নিউজ

কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের

দাবি বাস্তবায়নে দেরি হলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা।

#কারিগরি #শিক্ষার্থী #ছাত্র আন্দোলন

ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদোন্নতির সিদ্ধান্ত বাতিলসহ ছয় দাবিতে এবার বোর্ড ফাইনাল পরীক্ষার ফরম পূরণ বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা। দাবি বাস্তবায়নে দেরি হলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।

শনিবার (৫ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে এই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।

তারা বলেন, ঈদের আনন্দে আমরা অস্তিত্বের সংকট ভুলে যায়নি। আজ ৫ এপ্রিল শনিবার সারা দেশের সকল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের প্রতিনিধিরা ভিডিও বার্তা প্রদানের মাধ্যমে কারিগরি শিক্ষার্থীদের অস্তিত্বের এই সংকটে এক হওযার আহ্বান জানাবে।

আরও বলেন, কারিগরি ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশ কর্তৃক প্রধানকৃত ছয় দফা দাবি বাস্তবায়ন না হওযা পর্যন্ত সারা দেশের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ফরম ফিলাপ কার্যক্রম প্রত্যাখ্যান করেছে। দাবি মেনে নিয়ে বাস্তবায়ন করতে যত দেরি করবেন, আমরা তত কঠিন হতে কঠিন কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হবো।

সাম্প্রতিক সময় হাইকোর্টের একটি রিটের সিদ্ধান্ত প্রকাশ হয়েছে, যেখানে বলা হচ্ছে জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টররা পদোন্নতি পাবেন। এই সিদ্ধান্তকে আমরা শিক্ষার্থী সমাজ কালো রিট আখ্যা দিচ্ছি। ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের সাধারণ যোগ্যতা এইচএসসি-এসএসসি পাস। বাংলাদেশে মনে হয় না এমন কোনো সেক্টর আছে যেখানে এইচএসসি-এসএসসি পাস কোনো ব্যক্তি তার অভিজ্ঞতার জন্য শিক্ষক পদে পদোন্নতি পায়। কোনো সেক্টরে যদি এমন ঘটনার চেষ্টা করা হয় তাহলে তা হবে ওই সেক্টর ধ্বংসের সূচনা। হাইকোর্টের প্রকাশ কালো রিট শুনানি বাতিল করে শিক্ষার্থীদের ও ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের তাদের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে।

এর আগে, গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর সারা দেশের পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা একযোগে মাঠে নেমেছিলেন ছয় দফা আদায়ের উদ্দেশ্যে। সেদিন সবাই একযোগে ঢাকা পলিটেকনিকের সঙ্গে যোগ দিয়ে সাতরাস্তা ব্লকেড করে। দীর্ঘ সময় সড়ক অবরোধের পর তৎকালীন সচিব ড. ফরিদ উদ্দিন ও মহাপরিচালক মো. আজিজ তাহের খান শিক্ষার্থীদের মাঝে উপস্থিত হন এবং সেখানে প্রতিশ্রুতি দেন ছয় দাবি বাস্তবায়ন হবে। পাশাপাশি ক্রাফট ইন্সট্রাক্টর ৫০ শতাংশ পদোন্নতি চেয়ে যে মামলাটি করেছে সেটা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। তারা সর্বোচ্চভাবে এই মামলা বাতিলের জন্য কাজ করবে। পরবর্তী শুনানির এ মামলাটি নিষ্পত্তি হয়ে যাবে বলে আশ্বস্ত করেন। পরে শিক্ষার্থীরা রাজপথ ছেড়ে দেয়।

তবে সেই আশ্বাস না রাখায় ফের আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। গত ১৯ মার্চ রাতে ঢাকা পলিটেকনিক থেকে এক মিছিল বের করেন তারা। সেদিন থেকেই এই আন্দোলন সারা বাংলাদেশের ছড়িয়ে পড়ে এবং এখনো চলমান রয়েছে।

শিক্ষার্থীদের ৬ দাবির মধ্যে হলো-২০২১ খ্রিষ্টাব্দের বিতর্কিত নিয়োগপ্রাপ্ত সব ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের কারিগরি অধিদপ্তর এবং সব প্রতিষ্ঠান থেকে দ্রুত স্থানান্তর করতে হবে। ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স ৪ বছর মেয়াদি করতে হবে এবং প্রতি সেমিস্টার পূর্ণ মেয়াদের (৬ মাস) করতে হবে। পাশাপাশি মানসম্মত কর্মমুখী সিলেবাসসহ উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অত্যাধুনিক কারিকুলাম প্রণয়ন করতে হবে। উপসহকারী প্রকৌশলী পদে (১০ম গ্রেড) ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ার ব্যতীত অন্য কেউ আবেদন করতে পারবেন না। উপসহকারী প্রকৌশলী ও সমমান পদ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিযারদের জন্য সংরক্ষিত রাখতে হবে এবং ৪ বছরের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স শেষ করা মনোটেকনিক ও সার্ভেয়িং শিক্ষার্থীদের উপসহকারী প্রকৌশলী পদে নিযোগের ব্যবস্থা করতে হবে। কারিগরি সিস্টেম সংস্কার করে, কারিগরি সেক্টর পরিচালনার দায়িত্বে টেকনিক্যাল শিক্ষার জনবল নিয়োগ করে সিস্টেম পরিচালনা করতে হবে। কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের বিতর্কিত নিয়োগ বিধিমালা সংশোধন করে সব শূন্যপদে টেকনিক্যাল শিক্ষার জনবল নিযোগের মাধ্যমে সব (পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ) শিক্ষক সংকট দূর করতে হবে। একইসঙ্গে মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর এবং বোর্ডের বিভিন্ন কার্যক্রমের সঙ্গে আইডিইবি এবং পলিটেকনিক ও টিএসসির শিক্ষকদের পাশাপাশি ছাত্র প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে।

উচ্চশিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং এবং মনোটেকনিক শিক্ষার্থীদের জন্য কমপক্ষে তিনটি উন্নত বিশ্বের আদলে প্রযুক্তি ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ নিতে হবে এবং প্রস্তাবিত চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে শতভাগ সিট নিশ্চিত করতে হবে।

#কারিগরি #শিক্ষার্থী #ছাত্র আন্দোলন