জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের ৩০ শতাংশ প্রমোশন কোটা বাতিলের দাবিতে চট্টগ্রামের দুই নম্বর গেট এলাকায় সড়ক ও ষোলশহর রেলস্টেশনে রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন চট্টগ্রামের পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থীরা।
আরো পড়ুন: সড়ক অবরোধ করলেন পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) দুপুরে ষোলশহর রেলস্টেশনে কক্সবাজারগামী কক্সবাজার এক্সপ্রেস ট্রেন আটকে দিয়ে রেলপথ অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তারা। একই সময় নগরীর দুই নম্বর গেট এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থীরা। এতে নগরীর অন্যতম প্রধান এই সড়কে তৈরি হয় দীর্ঘ যানজট।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সম্প্রতি হাইকোর্ট ভোকেশনাল ও পলিটেকনিক থেকে পাশ করা প্রকৌশলীদের একই গ্রেডে অন্তর্ভুক্তির আদেশ দিয়েছেন যা কোনোভাবেই যৌক্তিক নয়।
পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা বলেন, চার বছর ডিপ্লোমা করার পর তারা চাকরিতে দশম গ্রেড পান। অথচ, ভোকেশনাল থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাশ করে এসে তারা দশম গ্রেডে চাকরি পাবে, এটা যৌক্তিক নয়। তারা অবিলম্বে হাইকোর্টের নির্দেশনা প্রত্যাহারের দাবি জানান। অন্যথায় ক্লাস, পরীক্ষা বর্জনসহ বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে হুঁশিয়ার করেন।
আন্দোলনের যৌক্তিকতা তুলে ধরে একজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘যাদের দায়িত্ব ছিল ল্যাবের তালা খোলা আর বন্ধ করা, তারা এখন স্যার হবে। একজন নার্স যেমন ডাক্তার হতে পারে না, তেমনি একজন অষ্টম শ্রেণি পাস ছাত্র ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের শিক্ষক হতে পারে না। চব্বিশের আন্দোলনের পরেও কিভাবে ৩০ শতাংশ কোটা থাকে? যদি এই কোটা বাতিল না হয় আমরা আবারও দেখিয়ে দিবো কিভাবে বাতিল করতে হয়।’
আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘চব্বিশের আন্দোলন হয়েছিল কোটা এবং মেধা নিয়ে। সেই আন্দোলন সফলের পর আজ ৮-৯ মাস পর কেন আমাদের এই দেশে আবার কোটা আসবে? ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের ১০ম গ্রেড হচ্ছে আমাদের অধিকার। তাহলে কিসের ভিত্তিতে গত পরশু রাতে ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের ৩০ শতাংশ কোটায় শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হবে? তাই আমরা ছয় দফা দাবিতে আন্দোলনে নেমেছি।’
এদিকে, শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধের ফলে মুরাদপুর-বহদ্দারহাটমুখী সড়ক এবং বহদ্দারহাট-মুরাদপুর থেকে জিইসিমুখী সড়কে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন কর্মজীবী এবং দূর-দূরান্তের যাত্রীরা। যানজট ছড়িয়েছে আশপাশের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতেও।
রোজাদারদের অনেককেই বিরক্তির ছাপ মুখে পায়ে হেঁটে গন্তব্যে রওয়ানা দিতে দেখা গেছে। যানজট সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে সড়কে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশকেও।
প্রসঙ্গত, জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে মূলত ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়োগ দেয়া হয়। এই পদে নিয়োগ পাওয়া ব্যক্তিরা বিভিন্ন কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে শিক্ষাদান করেন। সম্প্রতি হাইকোর্টের একটি রায়ের মাধ্যমে ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের ৩০ শতাংশ পদোন্নতি দিয়ে জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর করা হচ্ছে। যেখানে তারা ১০ম গ্রেডে চাকরি পাবেন। কিন্তু এতে ৮ম শ্রেণি, এসএসসি (ভোকেশনাল) ও এইচএসসি পাস ব্যক্তিরাও এই সুযোগ পাচ্ছেন বলে দাবি ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের।