দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা নেয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পুরোনো নিষেধাজ্ঞাগুলোকে পুনর্বহাল করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন আমেরিকার নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর ফলে আরব ও মুসলিম দেশগুলো আবারো ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে পারে।
এ নিয়ে রীতিমতো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সিভিল রাইটস বা নাগরিক অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলো। তাদের মতে, ট্রাম্পের সই করা নির্দেশিকা মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপের ভিত্তি তৈরি করবে।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ২০ জানুয়ারি সোমবার প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেয়ার পর অভিবাসনের নীতি নিয়ে নির্বাহী আদেশে সই করেন ট্রাম্প। তার এই আদেশের খড়গ নামবে সেদেশে বৈধভাবে বসবাসরত বিদেশি নাগরিক ও ফিলিস্তিনিদের অধিকারের পক্ষে। কথা বলা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ওপর। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতেই মূলত এই আদেশ।
ইন্টারন্যাশনাল রিফিউজি অ্যাসিসটেন্স প্রজেক্ট (আইআরএপি) নামে একটি অ্যাডভোটেক গ্রুপের আইনজীবী দীপা আলাগেসান বলেছেন, নতুন আদেশটি '২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে নেয়া মুসলিম দেশের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপের চেয়েও বড় এবং সবচেয়ে খারাপ। বহিরাগতদের প্রতি ঘৃণামূলক বিদ্বেষের কারণেই সেসময় ট্রাম্প এমন আদেশ দিয়েছিলেন।
তবে এবারের আদেশের সবচেয়ে খারাপ দিক হলো, এবার শুধু দেশটিতে বহিরাগতদের প্রবেশের ওপরই কড়াকড়ি আরোপ হবে না, বরং দেশ থেকে বহিরাগতদের বিতাড়নও করা হবে, এমনটাই বলেছেন দীপা। ট্রাম্প তার নতুন প্রশাসনের কর্মকর্তাদের এমন দেশগুলোর তালিকা করার নির্দেশ দিয়েছেন, যেসব দেশের নাগরিকদের ওপর ট্রাম্পের এমন আদেশকে ভীতিকর বলে অভিহিত করেছেন নাগরিক অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলো। কারণ নতুন এই আদেশ যতটা না জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি, তার চেয়ে বেশি ক্ষতিকর অভিবাসী পরিবারগুলোর জন্য, যা মুসলিম নিষেধাজ্ঞা নামে পরিচিত।আংশিক বা সম্পূর্ণ স্থগিতাদেশ জারি করতে পারবেন। এই নির্দেশের মধ্যে রয়েছে সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের চার বছরের শাসনামলে আমেরিকায় প্রবেশ করেছে এমন ব্যক্তিদের তথ্য যাচাই-বাছাই করা এবং তাদের কার্যকলাপের তথ্য সংগ্রহ করা। আর এসব তথ্য যদি আমেরিকায় অবস্থান করার বিপক্ষে যায়, তবে তাদের অবশ্যই বিতাড়ন করা হবে। এক্ষেত্রে অন্য কোনো কিছুই জরুরি বলে গণ্য হবে না।
ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশে আরো বলা হয়েছে, এসব তথ্য সংগ্রহের পর প্রশাসনকে নিশ্চিত করতে হবে যে, দেশটিতে বসবাসকারী বিদেশি নাগরিকরা আমেরিকার নাগরিক, সংস্কৃতি বা সরকারের প্রতি আস্থাশীল ও ঐকমত্য পোষণকারী এবং নির্ধারিত বিদেশি সন্ত্রাসী ও সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোকে সমর্থন ও সহায়তা করবে না।
দীপা বলেন, আদেশের অস্পষ্ট ভাষা 'ভীতিকর', কারণ এটি প্রশাসন যাদের 'টার্গেট' করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করার জন্য দেশটির নিরাপত্তা সংস্থাসহ অন্যান্য সংস্থাকে ব্যাপক ক্ষমতা দেয়।
এই আইন বিতাড়ন, পরিবার থেকে শিশুদের বিচ্ছিন্ন করা এবং ভয় দেখানোর মতো ঘটনা ঘটাবে। তাদের মধ্যে শঙ্কা তৈরি করবে যে, ট্রাম্প প্রশাসন যেকোনো সময় তাদের বিরুদ্ধে যেকোনো ধরনের ব্যবস্থা নিতে পারবে। অন্যান্য অ্যাডভোকেসি গ্রুপও আদেশটি প্রকাশের পর থেকে নিন্দা জানিয়েছে।