জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) মীর মশাররফ হোসেন হল (এমএইচ) ভূমিকম্পে ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সাত দিনের মধ্যে ভেঙে পুনর্নির্মাণের সুপারিশ করে রাজধানী নগর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। কিন্তু প্রায় দুই বছর আগে চিঠি দিলেও এখনো ভেঙে পুনর্নির্মাণ বা মেরামতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ।
রেজিস্ট্রার অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের ১২ মার্চ ভূমিকম্পে ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় মীর মশাররফ হোসেন হল সাত দিনের মধ্যে খালি করতে চিঠি দেয় রাজউক। না হলে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় বা মিলিটারি ইন্সটিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি থেকে বিশেষজ্ঞ মতামত নিয়ে তাদের জানাতে বলেছিলো। তা না করায় ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দে ফের চিঠি দেয় সংস্থাটি। এর প্রেক্ষিতে গত বছর ১০ মার্চ সিন্ডিকেট সভায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মেহেদী আহমদ আনসারীকে নিয়োগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ।
সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরীক্ষা-নিরীক্ষাপূর্বক ঝুঁকি নিরূপণ প্রতিবেদন প্রণয়নের পর তা জমা দিলে সিন্ডিকেটে উপস্থাপনের কথা ছিল। কিন্তু সিন্ডিকেট সভায় বিশেষজ্ঞ নিয়োগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত পরবর্তীতে অগ্রগতি হয়নি। এ ছাড়া আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর দায়িত্বে আসা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন রাজউকের চিঠির বিষয়ে অবগত নন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এ বি এম আজিজুর রহমান বলেন, এমএইচ হলের বিষয়ে রাজউক থেকে চিঠি এসেছিলো শুনেছিলাম। কিন্তু আমি তখন দায়িত্বে ছিলাম না, আমি এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে বলতে পারবো।
এ বিষয়ে সাবেক রেজিস্ট্রার আবু হাসানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও পাওয়া যায়নি তাকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, বিগত প্রশাসনের কাছে উল্লেখিত বিষয়ে চিঠি এসেছিলো বলে শুনেছি। তাদের সিদ্ধান্ত এবং পদক্ষেপগুলো আমাদের খতিয়ে দেখতে হবে। বিষয়টি অত্যন্ত সংবেদনশীল, তাই আমরা এবিষয়ে রাজউকের সঙ্গে যোগাযোগ করবো।
তাদের মূল্যায়ন ও পরামর্শের বিষয়ে শুনতে হবে। এ ছাড়া আমরা আমাদের পুরপ্রকৌশলীদের বক্তব্য ও পরামর্শ নেবো। তারপর বিষয়টি সিন্ডিকেটে তুলে শিক্ষার্থীদের মঙ্গলে বাস্তবভিত্তিক সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ নিতে পারবো, যোগ করেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও পাওয়া যায়নি।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ১২ মার্চ রাজউকের এক সভায় আরবান রেজিলিয়েনন্স প্রজেক্টের আওতায় প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জের ৪২টি ভবন ভেঙ্গে ফেলা বা পরিত্যক্ত ঘোষণার সিদ্ধান্ত হয়। এ সিদ্ধান্ত পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট দপ্তর-সংস্থাগুলোতে পাঠিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। ১৯৭৩ সালে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করা হয় এ হলের। ২ একর ৮১ শতাংশ জায়গা জুড়ে নির্মিত প্রজাপতি আকৃতির এ হলের স্থপতি ছিলেন সৈয়দ মাজহারুল ইসলাম।