জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে 'বাংলা ভাষা বিকাশের ধারা ও বিউপনিবেশায়ন’ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের কক্ষে এ সেমিনারের আয়োজন করে ইন্টারডিসিপ্লিনারি রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট কনসোর্টিয়াম (আইআরডিসি)।
সেমিনারে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বিশিষ্ট লেখক, চিন্তক ও কবি মুসা আল-হাফিজ। বাংলা ভাষার চিত্র, বৈচিত্র্য ও উৎপত্তির বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন তিনি। পাশাপাশি বাংলা ভাষার উৎপত্তি ও বিকাশের বিশদ বিবরণ উপস্থাপন করেন।
তিনি বলেন, বিভিন্ন উপনিবেশিক আমলে ইংরেজ, ফরাসি, ডেনিশ ও আর্যরা তাদের নিজ নিজ ভাষা প্রচার করেছিলেন দাসত্বের সুবিধা আদায়ের জন্য। এসব উপনিবেশিক শক্তি আমাদের হীনমন্যতায় নিপতিত করে আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতিকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল। মূলত বৈদিক আধিপত্যের বিরুদ্ধে অবস্থান জানান দেয়ার জন্যই বাংলা ভাষার আবির্ভাব ঘটে।
সেমিনারে আইআরডিসির সভাপতি ও ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিলাল হোসাইনের সভাপতিত্বে প্যানেল আলোচক হিসেবে ছিলেন বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. পারভীন আক্তার জেমী এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আনিসুর রহমান।
প্যানেল আলোচনায় অধ্যাপক ড. পারভীন আক্তার জেমী বলেন, ভাষা জীবের মতো জন্ম নেয় না, এটি নদীর প্রবাহের মতো। ভাষা ভৌগোলিক ও রাজনৈতিক সীমাবদ্ধতায় আবদ্ধ হতে পারে না। তিনটি সাম্রাজ্যবাদী শক্তি বাংলা ভাষার ওপর শাসন চালিয়েছিল এবং ভাষাকে শোষণ করতে চেয়েছিল। কিন্তু বাংলা ভাষার উৎকর্ষ ও শক্তির কারণে তা সম্ভব হয়নি। বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষায় আমাদের সবসময় সজাগ থাকতে হবে।
ড. মো. আনিসুর রহমান বলেন, ভাষার ইতিহাস জাতিকে পুনর্গঠন করে। দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র ভাষাভিত্তিক রাষ্ট্র বাংলাদেশ। আমাদের দেশে শিশুদের পাঠ্যবইগুলোতে বাংলা ভাষার সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও আইআরডিসির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হকের সঞ্চালনায় সেমিনারে আরো বক্তব্য দেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দীন। সেমিনারে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও গবেষকরা অংশগ্রহণ করেন।