কক্সবাজারে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ঘাঁটির কাছে সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত তরুণ শিহাব কবির নাহিদের পরিচয় জানা গেছে। সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) মাথায় জখম নিয়ে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পেশায় ব্যবসায়ী এই তরুণের মৃত্যুর কারণ সুস্পষ্টভাবে জানাতে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয়রা জানান, নিহত শিহাবের (৩০) বাবার নাম নাছির উদ্দিন। তিনি কক্সবাজার পিটিআই-এর সাবেক সুপার। মায়ের নাম আমেনা খাতুন। তিনি কক্সবাজার সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে কয়েক বছর আগে অবসর নিয়েছেন। বর্তমানে তারা সমিতি পাড়ায় বসবাস করেন।
নিহতের মা আমেনা খাতুন বলেন, 'বিমান বাহিনীর ঘাঁটির কাছে গণ্ডগোল হচ্ছিলো। এসময় বাসার ঘরের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে ছিল শিহাব। হঠাৎ একটি গুলি এসে তার মাথায় লাগে। মাথার খুলি ফেটে মগজ বেরিয়ে আসে। সঙ্গে সঙ্গে আহত শিহাবকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেছেন।'
এবিষয়ে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ড. মাহমুদ বলেন, 'সোমবার দুপুরে হাসপাতালে আনার কয়েক মিনিটের মধ্যে শিহাবের মৃত্যু হয়েছে। তার মাথার পেছনের অংশ উড়ে গেছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে। গুলিতে নাকি ইটপাটকেলের আঘাতে মাথায় জখম হয়েছে, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। ময়নাতদন্তের পর সুস্পষ্টভাবে মৃত্যুর কারণ বলা যাবে।'
এদিকে, সোমবার দুপুরে এই সংঘর্ষের ঘটনার বিষয়ে বিবৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর গণসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)। বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, ‘কিছু দুর্বৃত্ত বিমান বাহিনী ঘাঁটি কক্সবাজারের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। এ বিষয়ে বিমান বাহিনী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে।’
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাউদ্দিন জানান, এই সংঘর্ষের ঘটনায় একজন নিহত ও কয়েকজন আহত হয়েছেন। কীভাবে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হলো, তা উভয়পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে জানতে হবে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিমানবন্দর সম্প্রসারণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ বিষয়ে বৈঠকে অংশ নিতে এলাকাবাসীর কয়েকজন প্রতিনিধি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যাচ্ছিলেন। পথে বিমান বাহিনীর চেকপোস্টে তাদের বহনকারী ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা আটকে দেওয়া হয়। এসময় অটোরিকশায় থাকা জাহেদ নামের একজনকে জোর করে তুলে নেওয়া চেষ্টা করা হয়। খবর পেয়ে স্থানীয়রা বিমান ঘাঁটিতে হামলা চালায়। একপর্যায়ে বিমান বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষের সময় বিমান বাহিনীর সদস্যরা ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে। এতে কয়েকজন আহত হন। স্থানীয়রা আহতদের হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক একজনকে মৃত ঘোষণা করেন।