সারাদেশের মতো নীলফামারীর জলঢাকায় ‘স্কুল ফিডিং’ প্রকল্প বন্ধ হওয়ায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কমেছে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি। সরেজমিন এমন তথ্য পাওয়া গেছে
সংশ্লিষ্ট অফিস সূত্রে জানা যায়, দারিদ্র্যপীড়িত এলাকায় শিশু শিক্ষার্থীদের পুষ্টির চাহিদা নিশ্চিত এবং শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হার কমানোসহ বেশ কিছু উদ্দেশ্যে ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে স্কুল ফিডিং কার্যক্রম চালু করে সরকার।
প্রকল্পটি চালুর পর স্কুলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ছিল শতভাগ। এতে করে কয়েক দফায় চালু হওয়া প্রকল্পের মেয়াদও বেড়েছিল।
‘স্কুল ফিডিং’ প্রকল্পের আওতায় দেশের দারিদ্র্যপীড়িত ৩৫টি জেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩১ লাখ ৬০ হাজার শিশুকে প্রতিদিন টিফিন হিসেবে এক প্যাকেট বিস্কুট খেতে দেওয়া হতো।
তৎকালীন সরকার ও বিশ্বখাদ্য কর্মসূচির সহায়তায় প্রকল্পের কার্যক্রম পরিচালিত হতো এবং আরডিআরএস বাংলাদেশ-এর ফিল্ড মনিটরিং অফিসাররা তদারকি করতেন।
২০২১ খ্রিষ্টাব্দের জুন থেকে এ প্রকল্পের কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় বলে জানিয়েছেন, আরডিআরএস বাংলাদেশ-এর ব্রাঞ্চ ম্যানেজার আব্দুর রশিদ।
জলঢাকা উপজেলায় মোট ২শ ৪৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে।
উপজেলার আইডিয়াল কলেজপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী আরাফাত হোসেন বলেন, ‘আগে স্কুলে আসলেই প্রতিদিন টিফিনের সময় এক প্যাকেট করে বিস্কুট পেতাম। এখন পাই না। সে কারণে অনেকে স্কুলে আসতে চায় না।
চর হলদিবাড়ি-২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী মোস্তাকিম ও একই স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী আর্নিকা আক্তার জানান, আমরা চরাঞ্চলের মানুষ। আগে বিস্কুট পেতাম। এখন তা বন্ধ হওয়ায় আমাদের মধ্যে অনেকে আগের মতো আর স্কুলে না আসে না। তবে বিস্কুট দেয়া চালু হলে সবাই স্কুলে আসবে এবং টিফিনের সময় একসঙ্গে বিস্কুট খেতে পারবো।
আইডিয়াল কলেজপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খাতিজা আক্তার বলেন, স্কুল ফিডিং বন্ধ হওয়ার পর থেকে শিক্ষার্থীরা ঠিকমতো স্কুলে আসতে চায় না। তবে স্কুল ফিডিং চালু হলে শতভাগ শিক্ষার্থী স্কুলে উপস্থিত হবে।
স্থানীয় অভিভাবকেরা অতিদ্রুত এ প্রকল্প চালু করার তাগিদ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শরিফা আখতার বলেন, স্কুল ফিডিং বন্ধ হওয়ার প্রভাবে বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থী উপস্থিতি কম। তবে স্কুল ফিডিং চালু হলে একদিকে যেমন শিশুদের পুষ্টির চাহিদা পূরণ হবে, অন্যদিকে শিক্ষার্থীরা স্কুলে শতভাগ উপস্থিত হবে।
তিনি বলেন, এ প্রকল্পটি ফের চালু করতে একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি।