তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ছিলো মাত্র ২৭টি! সমকামিতা, মেয়েদের পোশাক,পরিবার, চেহারার গঠন সব কিছুতেই ছিলো তার কুজনর। আলোচিত এই শিক্ষক হাফিজুল ইসলাম। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তিনি। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ তদন্ত করে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে ২৭ জানুয়ারি থেকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠিয়েছেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ওই শিক্ষক যৌন হয়রানিসহ ছাত্র-ছাত্রীদেরকে শারীরিক এবং মানসিকভাবে হেনস্থা করেন এবং ব্যক্তিগত স্বার্থ চারিতার্থ করার জন্য ব্যবহার করেন। এ ছাড়া ছাত্রদের জোরপূর্বক সমকামিতায় বাধ্য করা, মেয়ে শিক্ষার্থীদের পোশাক, পরিবার ও চেহারা নিয়ে প্রতিনিয়ত বাজে মন্তব্য করতেন এবং মেয়েদের নর্তকী, বাজারের মেয়েসহ অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতেন। এ ছাড়াও এটেনডেন্সের বিনিময়ে ছাত্রলীগের মিছিলে পাঠানো, কথার অবাধ্য হলে ইন্টারনাল মার্কস কমিয়ে দেয়া, শিক্ষার্থীদের ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে মারার হুমকি, দাড়ি থাকলে শিবির ট্যাগ দিয়ে হেনস্থা, ক্লাসের শিডিউল দিয়ে ডেকে এনে জোরপূর্বক তার জন্মদিন পালন করানোর অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।
অফিস আদেশ অনুযায়ী, বিভাগের শিক্ষার্থীদের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী গত ২২ ডিসেম্বর সিন্ডিকেটের ২৬৬তম সাধারণ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী দক্ষতা ও শৃঙ্খলা বিধির (৪) র (ন) ও (ব) ধারা অনুযায়ী তাঁর বার্ষিক একটি ইনক্রিমেন্ট বাতিল করা হয়েছে এবং ২২ ডিসেম্বর থেকে পরবর্তী এক বছরের বাধ্যতামূলক ছুটি দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে হয়রানিসহ নানা অভিযোগ এনে অপসারণের দাবি তোলেন শিক্ষার্থীরা। এ জন্য গত বছরের ৭ অক্টোবর বিভাগের প্রধান ফটক অবরোধ করেন। পরে উপাচার্যের কাছে লিখিত ২৭ দফা অভিযোগ করেন এবং মৌখিকভাবে ঘটনার বর্ণনা দেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গঠিত তদন্ত কমিটি ঘটনার সত্যতা পায়।
তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে এ সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।