ঢাবি ভর্তিতে পোষ্য ও খেলোয়াড় কোটা বাতিলে রুলের শুনানি ৬ মার্চ | ভর্তি নিউজ

ঢাবি ভর্তিতে পোষ্য ও খেলোয়াড় কোটা বাতিলে রুলের শুনানি ৬ মার্চ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ভর্তিতে “পোষ্য ও খেলোয়াড় কোটা” কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে গত ১০ ডিসেম্বর রুল জারি করেন হাইকোর্ট। রিটের বিবাদীদের ২ সপ্তাহের মধ্যে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়। রিটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন), উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) ও রেজিস্ট্রারকে বিবাদী করা হয়েছে।

#ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ভর্তিতে ‘পোষ্য' ও 'খেলোয়াড়' কোটা বাতিলে রুলের শুনানির জন্য ৬ মার্চ নির্ধারণ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আশরাফ সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ সময় নির্ধারণ করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রিটকারীদের আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. সোলায়মান (তুষার)

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ভর্তিতে 'পোষ্য' ও 'খেলোয়াড় কোটা' কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দের ১০ ডিসেম্বর রুল জারি করেন হাইকোর্ট। রিটের বিবাদীদের দুই সপ্তাহের মধ্যে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়। রিটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপউপাচার্য (প্রশাসন), উপউপাচার্য (শিক্ষা) ও রেজিস্ট্রারকে বিবাদী করা হয়েছে।

গত বছরের ৫ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সংশ্লিষ্টদের ই-মেইলে এ বিষয়ে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়। নোটিশ পাওয়ার পর যথাযথ ব্যবস্থা না নেয়ায় একটি মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান, একজন অভিভাবক, একজন সাধারণ নাগরিক ও সুপ্রিম কোর্টের সাতজন আইনজীবীর পক্ষে রিটটি দায়ের করা হয়।

রিটকারীরা হলেন- মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান ল অ্যান্ড ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট, একজন ছাত্রের অভিভাবক মো. হোসেন আলী, ব্যবসায়ী মাহফুজুল ইসলাম, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. সোলায়মান (তুষার), ব্যারিস্টার মাহদী জামান (বনি), অ্যাডভোকেট বায়েজীদ হোসাইন, অ্যাডভোকেট নাঈম সরদার, অ্যাডভোকেট শাহেদ সিদ্দিকী, অ্যাডভোকেট খায়রুল বাশার এবং অ্যাডভোকেট লোকমান হাকিম।

উল্লেখ্য যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের সন্তান ও খেলোয়াড় কোটায় ভর্তি পরীক্ষায় কেবল মাত্র ৪০ শতাংশ নম্বর পেলেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পান। পোষ্য কোটা বৈষম্যমূলক হওয়ায় ইতামধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পোষ্য কোটা বাতিল করা হয়েছে।‌

নোটিশে পাঁচদিনের মধ্যে (ক) মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য ৫%; (খ) ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ১% এবং (গ) শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১% বহাল রেখে বাকি সব কোটা বাতিল করতে বলা হয়েছিল।

নোটিশে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাঙালি জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, শিক্ষক ও কর্মকর্তারা সব গণতান্ত্রিক ও অধিকার রক্ষার আন্দোলনে অবদান রেখেছেন। সবশেষ, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই-আগস্টের কোটা সংস্কার আন্দোলন ও স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতন আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের ভূমিকা ছিল অবিস্মরণীয়।

নোটিশে আরো বলা হয়েছিল, একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি প্রক্রিয়া অবশ্যই মেধার ভিত্তিতে হতে হবে এবং অন্য কোনো মানদণ্ডে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি প্রক্রিয়া সাধারণত বৈষম্যমূলক, স্বেচ্ছাচারী এবং অযৌক্তিক, কোনো বৈধ রাষ্ট্রীয় উদ্দেশ্যের সঙ্গে কোনো যৌক্তিক সম্পর্ক নেই। দেশের সর্বোচ্চ আদালত মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনাদের সন্তানদের জন্য সরকারি, আধাসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে চাকরিতে মাত্র ৫% কোটা নির্ধারণ করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রেও এই রায় প্রয়োগ করতে হবে।

নোটিশ পাওয়ার পর মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনি কোটা বাতিল করা হলেও কর্তৃপক্ষ পোষ্য ও খেলোয়াড় কোটা বহাল রেখেছেন উল্লেখ করে রিটকারীদের অভিযোগ, ‘‘সংবিধানের ২৮ (৪) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নারী বা শিশুদের অনুকূলে বা নাগরিকদের যেকোনো অনগ্রসর অংশের উন্নতির জন্য বিশেষ বিধান করা যেতে পারে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মচারীদের ছেলে-মেয়েরা ও খেলোয়াড়রা অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত নয়। তাই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ছেলে-মেয়েদের জন্য ভর্তি প্রক্রিয়ায় ওয়ার্ড বা পোষ্য কোটা সংরক্ষণ করা বৈষম্যমূলক, স্বেচ্ছাচারী ও অযৌক্তিক, যার সঙ্গে কোনো যৌক্তিক সম্পর্ক নেই।’

ব্যাপক অনিয়ম ও বির্তকের জেরে ২০০৩-২০০৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে খেলোয়াড় কোটা বন্ধ করা হয়। এরপর পতিত পলাতক স্বৈরাচার শেখ হাসিনার অভিপ্রায় অনুযায়ী ঢাবিতে ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষ থেকে ফের খোলোয়াড় কোটা চালু করা হয়।‌

খেলোয়াড়দের কোটায় ভর্তিতে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে উল্লেখ করে রিটকারীরা বলছেন, খেলোয়াড়দের কোটা সংবিধানে সংজ্ঞায়িত পশ্চাৎপদ বিভাগের অধীনে পড়ে না। তাই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি প্রক্রিয়ায় ক্রীড়াবিদদের জন্য বিশেষ কোটাও সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরিপন্থী। এছাড়াও খেলোয়াড় কোটায় স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতির সুযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মো. সোলায়মান (তুষার) বলেন, বিষয়টি নজরে আনা হলে আদালত শুনানির জন্য ৬ মার্চ তারিখ নির্ধারণ করেন।

#ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়