রক্তে হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়ার সমস্যা নতুন নয়। শরীরে লোহিত রক্ত কণিকার সংখ্যা যদি স্বাভাবিকের তুলনায় কমে যায় তখনই হিমোগ্লোবিনের ঘনত্ব কমতে থাকে। তখন সারা শরীরে অক্সিজেনের সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটে। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই শরীর দুর্বল হতে থাকে। দেখা দিতে থাকে ভিটামিন ও খনিজের ঘাটতি।
হিমোগ্লোবিন হলো লোহিত রক্তকণিকায় অবস্থিত এক প্রকার প্রোটিন, যার মধ্যে আয়রন এবং অক্সিজেন থাকে। ব্যক্তি বিশেষে আলাদা হলেও শরীরে স্বাভাবিকের থেকে আলাদা হলেও শরীরে স্বাভাবিক ভাবে রক্তে লোহিত কণিকার পরিমাণ হলো পুরুষদের ক্ষেত্রে ১৩.৮ থেকে ১৭.২ ডেসিলিটার। নারীদের ক্ষেত্রে ১২.১ থেকে ১৫.১ ডেসিলিটার। এর চেয়ে কমে যাওয়া মানেই রক্তাল্পতার সমস্যা দেখা দেবে।
রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়াবে এমন কী কী খাবেন এবং কীভাবে?
খাবার খেলেই হবে না, তা সঠিক পদ্ধতিতেও খেতে হবে। পুষ্টিবিদদের পরামর্শ, রক্তে আয়রনের ঘাটতি পূরণে প্রতি দিনের ডায়েটে রাখতে পারেন পালং, ব্রোকোলি, বিটরুল, পনির, ডিম, আপেল, তরমুজ, বেদানা, কুমড়োর বীজ, আমন্ড, অ্যাপ্রিকট এবং কিশমিশ।
বিটরুলে প্রচুর পরিমাণে আয়রন আছে। বিটরুল খেলে রক্তে লোহিত রক্তকণিকার পরিমাণ বাড়বে। তবে বিটরুল যদি খেতে হয় তা হলে, জুস করে অথবা সালাদ খেলে উপকার বেশি হবে। বেশি ঝালমশলা দিয়ে বিটের সবজি বানিয়ে খেলে লাভ হবে না।
আপেলেও ভালো পরিমাণে আয়রন ও অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট আছে। রক্ত সল্পতার সমস্যা যদি থাকে, তাহলে আপেল জুস করে খেলে লাভ হবে বেশি। অথবা আপেলের সঙ্গে পিনাট বাটার মিশিয়ে খান। এতে উপকার বেশি হবে।
রক্ত সল্পতা সারাতে খেজুর খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদেরা। তবে খেজুরের চাটনি করে খেলে লাভ হবে না। খেজুর শুধু বা ঈষদোষ্ণ দুধের সঙ্গে খেলে উপকার বেশি হবে।
সূর্যমুখীর বীজ ও কুমড়ার বীজেও আয়রনের মাত্রা বেশি। এটি খেলে আয়রনের ঘাটতি মিটবে।
আয়রন ও ভিটামিন সি সমৃদ্ধ বেদানা দইয়ের সঙ্গে খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন পুষ্টিবিদরা। তাদের কথায়, বেদানা যদি দইয়ের মতো প্রোবায়োটিকের সঙ্গে খাওয়া যায়, তা হলে উপকার বেশি হবে। তেমনই ভিটামিন সি-তে ভরপুর পালং শাক যদি স্মুদি বানিয়ে পাতিলেবুর রস দিয়ে খাওয়া যায়, তা হলে শরীরে আয়রন শোষণ বেশি হবে। রক্তাল্পতা থাকলে এই নিয়মে খেলে উপকার হবে।