রাজধানীর বনানীতে প্রাইমএশিয়া ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী জাহিদুল হাসান পারভেজ হত্যাকাণ্ডে আলোচিত দুই ছাত্রীকে আটক করতে রাজধানীর জুরাইনে অভিযান চালাচ্ছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। আজ বৃহস্পতিবার রাতে অভিযানে সেখানকার এক বাসা থেকে দুই মেয়েকে আটক করা হয়েছে। তবে তাঁদের পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেননি অভিযানে ডিবির কর্মকর্তারা।
পারভেজ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আলোচিত ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের ছাত্রী ফাতেমা তাহসিন ঐশী ও ইংরেজি বিভাগের ফারিয়া হক টিনা সেখানে আছেন খবর পেয়ে পুলিশ অভিযানে যায়। ঢাকা মহানগর পুলিশের মুখপাত্র তালেবুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় দুই ছাত্রী এখনো আটক হয়নি।
দুই ছাত্রীকে এরই মধ্যে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করে ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্স কর্তৃপক্ষ। গত মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ক্যাপ্টেন মোবাশ্বের আলী খন্দকার সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে গতকাল বুধবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত হত্যাকাণ্ডের সময় উপস্থিত দুই নারীর অবস্থান জানতে চেয়েছিলেন পুলিশের কাছে।
আদালত তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে জানতে চান, ওই দুই নারী কোথায়? তখন পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, ওই দুই নারীকে তারা খুঁজছে।
পারভেজ হত্যায় ৬ জন গ্রেফতার
পারভেজ হত্যা মামলার পরপরই ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরা ফুটেজ পর্যালোচনা করে ২১ এপ্রিল রাতে মহাখালী ওয়ারলেস গেট এলাকাসহ আশপাশের এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আল কামাল শেখ ওরফে কামাল (১৯) আলভী হোসেন জুনায়েদ (১৯) ও আল আমিন সানি (১৯) নামের তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরদিন মঙ্গলবার হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত ৫ নম্বর আসামি হৃদয় মিয়াজিকে কুমিল্লা থেকে গ্রেফতার করে র্যাব। এরপর মামলার এক নম্বর আসামি মেহরাজকে গ্রেফতার করা হয়। সর্বশেষ গতকাল তিন নম্বর এজাহারনামীয় আসামি মাহাথির হাসানকে (২০) চট্টগ্রাম থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন জাহিদুল ইসলাম পারভেজ (২৪)। তার মিডটার্ম পরীক্ষা চলছিল। পরীক্ষা শেষে ১৯ এপ্রিল বিকেল ৩টায় বন্ধু তরিকুল, সুকর্ণ, ইমতিয়াজসহ কয়েকজন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপরীতে র্যানকন বিল্ডিংয়ের সামনের একটি সিঙাড়ার দোকানে দাঁড়িয়ে কথাবার্তা বলছিলেন, হাসাহাসি করছিলেন।
তাদের পেছনেই দাঁড়ানো ছিল ইউনিভার্সিটি অব স্কলারসের দুজন ছাত্রী। পারভেজ তাদের নিয়ে হাসাহাসি করেছে কি না, সেটি জানতে আসেন মেহেরাজ ইসলাম (২০), আবু জহর গিফফারি পিয়াস (২০) ও মাহাথির হাসান (২০) নামের তিনজন।
পরে বিষয়টি নিয়ে তাদের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়। যা দেখা যায় সিসি ক্যামেরার ফুটেজেও।
পরে এ ঘটনা প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিস পর্যন্ত গড়ায়। শিক্ষকদের মধ্যস্থতায় বিষয়টি মীমাংসা হওয়ার পরও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হতেই গেটের সামনে পারভেজের ওপর হামলা হয়। তাতে ছুরিকাঘাতে মারা যান পারভেজ।