দৈনিকশিক্ষাডটকম, বরিশাল: মুলাদীতে বার্ষিক পরীক্ষায় অটো পাসের আশ্বাস দিয়ে শিক্ষার্থীদের নিয়ে মিছিলে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। উপজেলার বাটামারা ইউনিয়নের জাগরণী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সভাপতি মো. শহীদুল ইসলামের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে।
গতকাল বুধবার সকাল ৮টায় পরীক্ষা শুরু করে পৌনে ৯টায় খাতা জমা নিয়ে শিক্ষার্থীদের নিয়ে মিছিলে যান ওই প্রধান শিক্ষক। তবে ছাত্রীদের পরীক্ষা সাধারণ নিয়মে সকাল ১০টায় শুরু করা হয় বলে জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
বরিশাল-৩ (মুলাদী-বাবুগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির প্রার্থী গোলাম কিবরিয়া টিপু গতকাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে আসন্ন নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেন। এ সময় লোকসমাগম দেখাতে প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ করেন অভিভাবকেরা।
১৩ নভেম্বর জাগরণী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হয়। সকাল ১০টায় পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও গতকাল সকাল ৮টায় ছাত্রদের পরীক্ষা এবং সকাল ১০টায় ছাত্রীদের পরীক্ষা নেওয়ার নোটিশ দেওয়া হয়। সকাল ৮টায় ছাত্রদের পরীক্ষা শুরু করে পৌনে ৯টায় খাতা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন প্রধান শিক্ষক। এ সময় শিক্ষার্থীদের লেখা শেষ হয়নি জানালে তাদের আশ্বাস দেওয়া হয়, পরীক্ষায় সবাই অটো পাস।
নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাব্বির জানায়, গতকাল পৌরনীতি পরীক্ষা ছিল। সকাল ৮টায় পরীক্ষা শুরু হয় এবং পৌনে ৯টায় শিক্ষকেরা খাতা নিয়ে নেন। ৩ ঘণ্টার পরীক্ষা পৌনে ২ ঘণ্টায় লেখা শেষ না হওয়ায় শিক্ষকেরা বলেন, ‘এ বিষয়ে সবাই অটো পাস।’ পরে সকাল ১০টার দিকে ট্রলারে করে বিদ্যালয়ের সব ছাত্রকে মুলাদী উপজেলা সদরে মিছিলে নেওয়া হয়।
বিদ্যালয়ের অভিভাবক মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘বাটামারা ইউনিয়নে জাতীয় পার্টির লোক কম থাকায় এই প্রার্থীর কাছ থেকে সুবিধা নিতে প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করেছেন। প্রধান শিক্ষক পৌনে দুই ঘণ্টায় পরীক্ষা শেষ করে অটো পাসের আশ্বাস দিয়ে ছাত্রদের নিয়ে মিছিলে গেছেন। বিষয়টি ঠিক হয়নি। শিক্ষকেরা অটো পাসের আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া ছেড়ে দেবে।’inside-ad]
এ বিষয়ে জাগরণী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘জাতীয় পার্টির প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার অনুষ্ঠান থাকায় ছাত্রদের আগে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। কিছু ছাত্র স্বেচ্ছায় মিছিলে গেছে। শিক্ষার্থীদের অটো পাসের আশ্বাস কিংবা বাধ্য করা হয়নি।’
জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা বিষয়টি আমাকে জানিয়েছেন। প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে মিছিলে যেতে পারেন না। এ বিষয়ে তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’