অটোপাসের প্রভাবে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষাভীতি - দৈনিকশিক্ষা

অটোপাসের প্রভাবে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষাভীতি

দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক |

করোনাকালে সবকিছু সীমিত আকারে চললেও দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান টানা দেড় বছর বন্ধ রেখেছিল শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার। দীর্ঘ সময়ে স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় ছাত্রছাত্রীরা হয়েছে পড়ালেখাবিমুখ। 

বড় ছুটির পর ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের সেপ্টেম্বরে স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়া হলেও পড়ালেখার পরিবেশ স্বাভাবিক করেনি তৎকালীন সরকার। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে স্কুল-কলেজগুলোয়ও নেওয়া হয়নি অতিরিক্ত ক্লাস। বরং আওয়ামী লীগ সরকার চালু করে দেয় অটোপাস। আর এর মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীরা পড়ালেখা ছাড়াই পাস করে পাবলিক পরীক্ষায়ও। মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন আকতারুজ্জামান। 

প্রতিবেদনে আরো জানা যায়, শিক্ষাসংশ্লিষ্টরা বলছেন, ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনা নিয়ে ছেলেখেলা খেলেছে সাবেক সরকার। করোনার পর বছরের পর বছর পার হলেও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি পড়ালেখায় চালু রাখেন সংক্ষিপ্ত সিলেবাস। ফলে পড়ালেখার আগ্রহ কমতে থাকে ছাত্রছাত্রীদের। না পড়ে পরীক্ষায় পাস করা বা নামে মাত্র পড়াশোনায় পাস করা স্বভাবে পরিণত হয় তাদের। ফলে চলতি বছর অল্প কয়েকটি বিষয়ে পরীক্ষা নিয়ে বাকিগুলোয় অটোপাস দেওয়া হলেও আন্দোলন শুরু করেছেন এইচএসসিতে ফেল করা শিক্ষার্থীরা।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেছেন, অটোপাস চেয়ে আন্দোলনকারীদের মধ্যে বহিরাগত ঢুকে গেছে।

করোনাকালে দেড় বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পর স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়া হয় ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ১২ সেপ্টেম্বর। এর পর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ধীরে ধীরে খুলে দেওয়া হলেও বছরের পর বছর ধরেই মাধ্যমিক পর্যায়ের এসএসসি ও সমমান এবং উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের এইচএসসি ও সমমানে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা শুরু হয়। তখন ৩০টি এমসিকিউর মধ্যেও দিতে হয়েছে ১৫টির উত্তর, যা শিক্ষাসংশ্লিষ্টদের চোখে ছিল অবান্তর, অযৌক্তিক। কারণ এমসিকিউতে এমনিতেই উত্তর বাছাই করার সুযোগ থাকে। সেখানে প্রশ্ন বাছাইয়ের বাড়তি সুযোগ দেওয়াকে হাস্যকর হিসেবে মনে করেন তারা।

আওয়ামী আমলে এমন দায়সারা পরীক্ষা পদ্ধতির ফলে ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনা বাদ দিয়ে হেসেখেলেই পাস করেছে। পরীক্ষা বলতে যা বোঝায় তা একেবারেই ছিল অনুপস্থিত। আওয়ামী লীগ আমলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় পড়াশোনার চাপ না থাকায় বড় পরিসরে শুরু হয় কিশোর অপরাধও।

পাবলিক পরীক্ষায় ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে শুরু হয় সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা নেওয়া। তখনো সব বিষয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। শুধু নৈর্বাচনিক বিষয়ে অর্থাৎ বিজ্ঞান বিভাগের জন্য বিজ্ঞানের বিষয়গুলো, মানবিক বিভাগে শুধু মানবিকের বিষয়গুলো আর বাণিজ্যে শুধু বাণিজ্যের বিষয়গুলোর পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল। ইংরেজির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কোনো পরীক্ষাই হয়নি তখন।

২০২২ ও ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দেও সংক্ষিপ্ত সিলেবাসেই এসএসসি-এইচএসসি ও সমমানের পাবলিক পরীক্ষা নেয় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন শেখ হাসিনার সরকার। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর চার বছরেও সংক্ষিপ্ত সিলেবাস থেকে ফেরেনি আওয়ামী লীগ। চলতি বছরের এইচএসসিতেও সংক্ষিপ্ত সিলেবাস রেখেছিল সাবেক শেখ হাসিনা সরকার। আর এ সংক্ষিপ্ত পরীক্ষাও বাতিল করতে সচিবালয়ে আন্দোলন করেছিল কিছু শিক্ষার্থী। আন্দোলনের মুখে বাতিলও হয় পরীক্ষা।

সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আ ন ম এহছানুল হক মিলন বলেন, ‘বিনা পরীক্ষায় পাস, প্রশ্নপত্র ফাঁস করে পাস এবং লেখাপড়া না করে পাস এগুলো শুরু হয়েছিল আওয়ামী লীগের আমলে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, দীপু মনি ও মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের মাধ্যমে। সেই ধারাবাহিকতায় একটি শ্রেণি তৈরি হয়েছে যারা পড়ালেখা ছাড়াই পাস করতে চায়। কিন্তু মেধাবীরা এটি চায় না। মেধাবীরা পড়ালেখা করে পরীক্ষা দিতে চায়।’

তিনি আরো বলেন, ‘এবারের এইচএসসিতে অনেক বিষয়ে পরীক্ষা না নিয়ে এসএসসির ভিত্তিতে ফল দেওয়া হয়েছে। এর পরও যারা ফেল করা শিক্ষার্থীদের পাস করিয়ে দিতে আন্দোলন করছে, তারা অছাত্র। তারা এ দেশে পড়াশোনা করার যোগ্যতা হারিয়েছে। আর তাদের উসকানি দিচ্ছে মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা বোর্ডের শীর্ষ পদগুলোয় আওয়ামী লীগের নিয়োগকৃত যারা রয়েছেন, তারা।’

এহছানুল হক মিলন মন্তব্য করেন, এটি করা হচ্ছে বর্তমান সরকারকে বিব্রত করতে।

গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধূরী বলেন, ‘করোনার কারণে অটোপাস আর সংক্ষিপ্ত সিলেবাস চালু করা হয়েছিল। কিন্তু একসময় এর লাগাম টানা উচিত ছিল। তা না করে প্রতি বছর সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। এটি করা ঠিক হয়নি। এর মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের একটি প্রবণতা তৈরি করা হয়েছে এভাবেই তারা সব সময় পার পেয়ে যাবে। এর ফলে শুধু শিক্ষার্থীরাই নয়, জাতিও ক্ষতির সম্মুখীন হলো।’

ইএফটিতে বেতন দিতে এমপিও আবেদনের সময় এগোলো - dainik shiksha ইএফটিতে বেতন দিতে এমপিও আবেদনের সময় এগোলো জবিতে ভর্তির প্রাথমিক আবেদন শুরু ১ ডিসেম্বর - dainik shiksha জবিতে ভর্তির প্রাথমিক আবেদন শুরু ১ ডিসেম্বর সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তি: দশ দিনে আবেদন প্রায় ৬ লাখ - dainik shiksha সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তি: দশ দিনে আবেদন প্রায় ৬ লাখ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৮ সদস্যের কমিটি ঘোষণা - dainik shiksha বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৮ সদস্যের কমিটি ঘোষণা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ধারণা বাড়াতেই পাঠ্যক্রমে তথ্য অধিকার আইন বিষয় যুক্ত: এনসিটিবি চেয়ারম্যান - dainik shiksha ধারণা বাড়াতেই পাঠ্যক্রমে তথ্য অধিকার আইন বিষয় যুক্ত: এনসিটিবি চেয়ারম্যান কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: ২১তম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি - dainik shiksha শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: ২১তম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি সরকারি কলেজ প্রদর্শকদের পদোন্নতির খসড়া প্রকাশ - dainik shiksha সরকারি কলেজ প্রদর্শকদের পদোন্নতির খসড়া প্রকাশ সুইডেনে স্কলারশিপে স্নাতকোত্তরের সুযোগ - dainik shiksha সুইডেনে স্কলারশিপে স্নাতকোত্তরের সুযোগ পঞ্চমে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা, বার্ষিকে ৪ স্তরে মূল্যায়ন - dainik shiksha পঞ্চমে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা, বার্ষিকে ৪ স্তরে মূল্যায়ন দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0074470043182373