সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষার জন্য ফি না নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। কিন্তু তা না মেনে বার্ষিক পরীক্ষার জন্য খুদে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফি আদায় করছেন নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। শ্রেণি ভেদে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ২০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত আদায় করেছেন তিনি। উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নের শৌলমারী আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রধান শিক্ষক আব্দুল হামিদ ফি নিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে ওই স্কুলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীরা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, বার্ষিক পরিক্ষার জন্য স্কুলের ম্যাডাম আমাদের কাছ থেকে ২০ টাকা করে চেয়েছিলেন,তাই আমরা সে টাকা জমা দিয়েছি।
তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী কনা রানি রায় ও চতুর্থ শ্রেণির সাগর, বিশাল চন্দ্র রায়, রজিত চন্দ্র, পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী রোকসানা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, স্কুলের স্যার বার্ষিক পরীক্ষার জন্য আমাদের কাছ থেকে জনপ্রতি ৫০ টাকা চেয়েছিলেন,আমরা ৫০ টাকাই জমা দিয়েছি।
জানা যায়, ওই স্কুলে মোট ৩৬৬ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে নিয়মিত শিক্ষার্থী রয়েছেন ৩২২ জন। এর মধ্যে প্রাক প্রাথমিকে ২৮ জন, প্রথম শ্রেণিতে ৫০ জন, দ্বিতীয় শ্রেণিতে ৬৯ জন, তৃতীয় শ্রেণিতে ৬০ জন, চতুর্থ শ্রেণিতে ৭০ জন এবং পঞ্চম শ্রেণিতে ৪৫ জন শিক্ষার্থী বার্ষিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবেন।
ওই ক্লাস্টারের একাধিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, এবারের বার্ষিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্রসহ যাবতীয় খরচ স্লিপ ফান্ড ও অনুষাঙ্গিক ব্যয় খাত থেকে খরচ করার নির্দেশ দিয়েছে অধিদপ্তর। সেখানে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার কোন প্রয়োজন নেই।
জানতে চাইলে বার্ষিক পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে শৌলমারী আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হামিদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ওই টাকা দিয়ে পরীক্ষার খাতাপত্র নেয়া হবে।
জানতে চাইলে শৌলমারী ক্লাস্টারে দায়িত্বে থাকা উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হাবিবুর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, বার্ষিক পরীক্ষার জন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার কোন নিয়ম নেই, দ্রুত টাকা ফেরতের নির্দেশ দিচ্ছি। আর প্রধান শিক্ষককে শোকজ করা হবে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নুর মোহাম্মাদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, সরকারি বরাদ্দ থেকে বার্ষিক পরীক্ষার সব খরচ বহন করা হবে। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।