দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক: পছন্দের প্রার্থী কলেজে সভাপতি না হওয়ায় শহীদ স্মৃতি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দীপক কুমার মল্লিককে জিহ্বা টেনে ছিঁড়ে ফেলাসহ জীবননাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সাতক্ষীরা সদর আসনে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মো. আশরাফুজ্জামান আশুর বিরুদ্ধে।
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দীপক কুমার মল্লিক বলেন, আমার কলেজের নিয়মিত গভর্নিং বডির মেয়াদ শেষ হওয়ায় নিয়মতান্ত্রিকভাবে গভর্নিং বডি গঠনের জন্য সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করি। বিধি মোতাবেক সভাপতি ও বিদ্যোৎসাহী সদস্যদের নাম পাঠাতে হয়। সে অনুসারে সভাপতির নির্দেশক্রমে বৈঠক ডাকা হয়। কমিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে তাদের লিখিত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করার জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্ধারিত ফরমে সভাপতি ও বিদ্যোৎসাহী সদস্যের নাম পাঠাই।
তিনি বলেন, সদর আসনের সংসদ সদস্যের মনোনীত ব্যক্তি সভাপতি না হওয়ায় ওনার পাঠানো প্রতিনিধির মোবাইল ফোনে সোমবার (১৩ মে) সকালে আমাকে গালাগাল করে এবং আমার পিঠের চামড়া উঠানোসহ জিহ্বা টেনে ছিঁড়ে দেবে বলে হুমকি দেয়। এ ছাড়া আরও বলেন, জীবনে বাঁচতে হলে ওনার সিদ্ধান্তকে সন্ধ্যার ভেতরে বাস্তবায়ন করতে হবে। না হলে পিঠের চামড়া উঠানোসহ অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করতে থাকেন। আমার প্রশ্ন হলো, এমন প্রতিনিধির কাছে আমাদের শিক্ষিত সমাজের নিরাপত্তা কোথায়।
শহীদ স্মৃতি কলেজের সভাপতি গোলাম মোরশেদ বলেন, আমরা সাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাস করি। তবে একজন নির্বাচিত প্রতিনিধি একজন শিক্ষকের সঙ্গে এ ধরনের ব্যবহার করতে পারেন কিনা আমার জানা ছিল না।
তিনি বলেন, একজন অধ্যক্ষকে গালাগাল করেছে। এ জন্য প্রাথমিকভাবে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের কাছে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ একটি অভিযোগ করেছেন। পরবর্তীতে রেজুলেশনের মাধ্যমে কলেজের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ সাতক্ষীরা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক স্বপন কুমার শীল বলেন, আমরা এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। আমি সংসদ সদস্যকে কল দিয়েছিলাম। তিনি বলেছেন, আমার মনোনীত প্রার্থীকে সভাপতি না করায় তাকে বকাবকি করেছি, তবে কোনো হুমকি দেওয়া হয়নি।
তিনি বলেন, আমরা এ বিষয়ে কমিটির বাকি সদস্যদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করব।
জানতে চাইলে সাতক্ষীরা সদরের সংসদ সদস্য আশরাফুজ্জামান আশু বলেন, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের সঙ্গে নিয়ে আমার বিরুদ্ধে হুমকি দেওয়ার একটি কথা বলে বেড়াচ্ছে। সে কোনো ডকুমেন্টস দিতে পারবে না যে আমি তাকে কিছু বলেছি।
তিনি বলেন, গত দুই থেকে আড়াই মাস আগে আমি অধ্যক্ষ সাহেবের কাছে একটি ডিওলেটার দিয়েছিলাম ভিসি সাহেব বরাবর পাঠানোর জন্য। কিন্তু উনি সেটা পাঠাননি। বর্তমান যে সভাপতি হিসেবে দায়িত্বরত আছে তার নামে অনেক অভিযোগ রয়েছে, আমি চাচ্ছিলাম একটা ভালো ছেলে ও ভালো মানুষ কলেজের সভাপতির পদে দেওয়ার জন্য।