দৈনিক শিক্ষাডটকম, নাটোর : নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার মাধনগর টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের অধ্যক্ষ নয়ন চন্দ্র প্রামানিকের বিরুদ্ধে অন্যের ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে নিজের নামে বেতন উত্তোলন, সরকারি টাকা আত্মসাৎ এবং চাকরি দেয়ার নামে প্রতারণার করে সাড়ে ১৩ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ তুলেছেন মোজাম্মেল হক নামে এক ভূক্তভোগী শিক্ষক। একই সময়ে এলাকাবাসীও গণস্বাক্ষর দিয়ে এই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিভিন্ন দপ্তরে তদন্তের দাবি জানিয়ে আবেদন করেছেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষক মোজাম্মেল হক গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে নাটোরের সাংবাদিকদের বলেন, ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে ওই কলেজে উদ্যোক্তা উন্নয়ন বিষয়ে প্রভাষক পদে সকল নিয়ম মেনে তিনি নিয়োগ পান। নিয়োগের সময় তিনি প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের জন্য অধ্যক্ষকে মোট সাড়ে ১৩ লাখ টাকা প্রদান করেন। নিয়োগের পর তিনি জানতে পারেন কলেজটিতে উদ্যোক্তা উন্নয়ন (প্রভাষক) পদে বেতনের জন্য জিও লেটারের অনুমোদন নেই। বিষয়টি অধ্যক্ষকে জানালে জিও হয়ে যাবে বলে তাকে অধ্যক্ষ আশ্বস্ত করেন। সেই আশায় প্রতিদিন দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে তিনি নিয়মিত কলেজে গিয়ে ক্লাস নিয়েছেন। পরবর্তীতে ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে জিও অনুমোদন হলে তিনি বেতনের জন্য অধ্যক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এসময় অধ্যক্ষ তার এনটিআরসিএর সনদ সঠিক নয় দাবি করে এই পদ থেকে তাকে সরিয়ে নিজের শ্যালিকাকে নিয়োগ দেয়ার চেষ্টা শুরু করেন। এ সময় অধ্যক্ষের দাবি করা আরো ৫ লাখ দিতে না চাওয়ায় অধ্যক্ষ তার এনটিআরসিএর সনদ জাল বলে শনাক্ত করেন। পরবর্তীতে তাকে কোণঠাসা করতে অধ্যক্ষ এবং তার স্ত্রী বিথীকা সরকার (একই কলেজের শিক্ষক) তার বিরুদ্ধে হুমকি ও প্রতিষ্ঠানের ২৫ লাখ টাকা ক্ষতি করার অভিযোগ তুলে নলডাঙ্গা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এদিকে এর আগে এলাকাবাসী অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে টাকার বিনিয়মে নিজের ভায়রা ভাইসহ কয়েকজনকে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া, নিজের স্ত্রী বিথীকা সরকারকে অবৈধভাবে নিয়োগ, দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ, স্থানীয় সংসদ সদস্যকে দেয়ার নাম করে ৫ লাখ টাকা আত্মসাৎসহ নানা অনিয়মের বিচার দাবি করে মাধনগর ইউনিয়নবাসীর ব্যানারে মানববন্ধনের পাশাপাশি গণস্বাক্ষর নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেছেন।
অভিযুক্ত অধ্যক্ষ নয়ন চন্দ্র প্রামানিক তার বিরুদ্ধে করা সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মোজাম্মেল হকের জাল সনদ ধরা পড়ায় কলেজের সভাপতি তার বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ বিষয়ে আমার কিছু করার নেই। এটা আইনের বিষয়। মোজাম্মেল হক বিভিন্ন সময় তার বিরুদ্ধে নানা রকম অভিযোগ করছেন। দুদকের মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। আমি বলতেও পারবো না। এটা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিষয়।