বিখ্যাত কবি, ঔপন্যাসিক ও কিশোরসাহিত্যিক হুমায়ুন আজাদের আজ জন্মদিন। বাংলাদেশের অন্যতম প্রথাবিরোধী এবং বহুমাত্রিক লেখক যিনি ধর্ম, মৌলবাদ, প্রতিষ্ঠান ও সংস্কারবিরোধিতা, যৌনতা, নারীবাদ ও রাজনীতি বিষয়ে তার বক্তব্যের জন্য ১৯৮০-এর দশক থেকে পাঠকগোষ্ঠীর দৃষ্টি আর্কষনে সক্ষম হয়েছিলেন।
১৯৬২ খ্রিষ্টাব্দে উচ্চশিক্ষার জন্য আজাদ ঢাকায় চলে আসেন। মানবিক বিভাগে পড়ার ইচ্ছা থাকলেও বাবার ইচ্ছায় ১৯৬২ খ্রিষ্টাব্দের সেপ্টেম্বরে তিনি ঢাকা কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণিতে ভর্তি হন। ১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। এরপর একই বছর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদে বাংলা বিভাগে ভর্তি হন। ১৯৬৭ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে স্নাতক ডিগ্রি এবং ১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দে একই বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। উভয় পরীক্ষায় তিনি প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হন। ১৯৭৮ খ্রিষ্টাব্দের ১ নভেম্বর আজাদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সহযোগী অধ্যাপক হিসাবে যোগদান করেন এবং পরবর্তীকালে বাংলা বিভাগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৬ খ্রিষ্টাব্দে তিনি অধ্যাপক পদে উন্নীত হন।
হুমায়ুন আজাদ সর্বপ্রথম একটি ছোটগল্প লিখেছিলেন এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়া শেষ করে স্কটল্যান্ড থেকে এসে। গল্পটির নাম তিনি দিয়েছিলেন অনবরত তুষারপাত। এই গল্পটি তিনি পরে দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকাতে ১৯৭৯ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশ করেছিলেন। এই গল্পটি সহ ১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত লেখা আরো পাঁচটি গল্প তিনি যাদুকরের মৃত্যু বইতে সংকলিত করেছিলেন। এরপর তিনি শিশুকিশোরদের জন্য আরো তিনটি গল্প লিখেন যেগুলো তিনি কিছু শিশুতোষ কবিতা সহ বুকপকেটে জোনাকি পোকা গ্রন্থে সংকলন করেন।
হুমায়ুন আজাদ ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দের ১১ আগস্ট জার্মানিতে মৃত্যুবরণ করেন। তার মরদেহ জার্মানি থেকে ঢাকায় আনা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাযার নামাজ শেষে তার মরদেহ রাড়িখালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানেই তাকে সমাহিত করা হয়। তার কবর সিমেন্ট দিয়ে পাকা করে একটি বইয়ের মত করে বানানো হয়।