মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবে ১৪৪৫ হিজরি সনের পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে। দেশটিতে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে আগামী ১৬ জুন। আর হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে আগামী ১৪ জুন থেকে।
এসময় সৌদি আরবের অভ্যন্তরীণ এবং সারা বিশ্ব থেকে দেশটিতে জড়ো হওয়া লাখ লাখ মুসল্লি হজের যাবতীয় আচার অনুষ্ঠান পালন করবেন। এমন অবস্থায় অনুমতি ছাড়া পবিত্র হজ পালনের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে সৌদি আরব।
দেশটি বলছে, অনুমতি ছাড়া কেউ হজ পালনের চেষ্টা করলে বড় অংকের আর্থিক জরিমানা করা হবে। এছাড়া প্রবাসীদের মধ্যে কেউ এমন চেষ্টা করলে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর পাশাপাশি পুনরায় দেশটিতে প্রবেশে বাধা দেয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে সৌদি আরব।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজ।
সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেয়া এক পোস্টে সৌদি আরবের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, সৌদি আরবে প্রবাসী বাসিন্দাদের যাদের অনুমতি ছাড়াই হজ পালন করতে দেখা যাবে তাদেরকে নিজ দেশে নির্বাসিত করা হবে এবং পুনরায় সৌদিতে প্রবেশে বাধা দেয়া হবে।
এছাড়া অনুমতি ছাড়া হজ পালনের আচার অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে কেউ হজ প্রবিধান লঙ্ঘন করেছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেলে সৌদি নাগরিক, বাসিন্দা বা দর্শনার্থী যেই হোক না কেন, যে কারও ওপর ১০ হাজার সৌদি রিয়াল জরিমানা আরোপ করা হবে বলে নিশ্চিত করেছে দেশটির পাবলিক সিকিউরিটি।
গালফ নিউজ বলছে, অনুমতি ছাড়া হজ পালনের চেষ্টাকারী প্রবাসী বাসিন্দাদের তাদের নিজ দেশে নির্বাসিত করা হবে এবং আইন অনুযায়ী নির্ধারিত নির্দিষ্ট সময়ের জন্য দেশটিতে পুনরায় প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হবে।
এদিকে সৌদির পাবলিক সিকিউরিটি জোর দিয়ে বলেছে, একই অপরাধ বারবার করা অপরাধীদের জন্য জরিমানার অংকও দ্বিগুণ করা হবে। সংস্থাটি হজ প্রবিধানগুলো মেনে চলার গুরুত্বের ওপর জোর দেয়ার পাশাপাশি হাজীদের নিরাপদে, আরামদায়ক এবং শান্তিপূর্ণভাবে পবিত্র হজ পালন নিশ্চিত করার জন্য নির্দেশাবলী মেনে চলার ওপরও জোর দিয়েছে।
এছাড়া অনুমতি ছাড়া হজ পালনকারীদের আনা-নেয়া তথা পরিবহনের কাজে জড়িত কেউ ধরা পড়লে তাকে ছয় মাস পর্যন্ত জেল এবং ৫০ হাজার রিয়াল পর্যন্ত জরিমানা দিতে হবে। এই নিয়ম লঙ্ঘনকারী যদি প্রবাসী হয়, তবে নির্দিষ্ট সাজা ভোগ করার পরে তাকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে এবং আইন অনুযায়ী নির্ধারিত নির্দিষ্ট সময়ের জন্য দেশটিতে পুনরায় প্রবেশ করতে বাধা দেয়া হবে।
উল্লেখ্য, ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের অন্যতম একটি স্তম্ভ হলো হজ। প্রতি বছর জিলহজ মাসে বিশ্বের লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্লি হজ পালন করে থাকেন। যেসব মুসল্লির আর্থিক ও শারীরিক সক্ষমতা রয়েছে তাদের জীবনে অন্তত একবার হলেও হজ পালন করার বিধান রয়েছে।
মূলত মুসল্লিরা যেন নির্বিঘ্নে, আরামদায়ক ও শান্তিপূর্ণভাবে হজ পালন করতে পারেন সেজন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে সৌদি আরব। এবার দেশটি হজ করার জন্য অনুমতি নেয়ার বিষয়টি আবশ্যিক করে দিয়েছে।