দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক: পরীক্ষার্থীর অন্তর্বাসে লুকানো অত্যাধুনিক ডিজিটাল ডিভাইসের সঙ্গে যুক্ত থাকে কানের মধ্যে রাখা ক্ষুদ্রাকৃতির বল। পরীক্ষা শুরুর মাত্র দশ মিনিটের মধ্যে উত্তরপত্র সমাধান করে এই প্রযুক্তির মাধ্যমে জানানো হয় পরীক্ষার্থীদের। এভাবে নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস করা একটি চক্রের সাত জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। চক্রটির সদস্যরা লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। চক্রটির অন্য সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
রোববার (১২ মে) রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- জুয়েল খান, রাসেল, মাহমুদুল হাসান শাকিল, আব্দুর রহমান, আরিফুল ইসলাম, আজহারুল ইসলাম এবং মাসুম হাওলাদার। তাদের কাছ থেকে বিশেষভাবে প্রস্তুত করা ১০টি অত্যাধুনিক স্পাই ডিভাইস, সাতটি মোবাইল ফোন ও ১০টি সিমকার্ড এবং একটি পকেট রাউটার জব্দ করা হয়।
চক্রটির সদস্যরা বিভিন্ন চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস করেছেন। এর মধ্যে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ (তৃতীয় ধাপ), বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকিট কালেক্টর (গ্রেড-২) ও বুকিং অ্যাসিস্ট্যান্ট (গ্রেড-২), পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের অফিস সহায়ক, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, টাঙ্গাইলের অফিস সহায়ক, মৎস্য বিভাগের অফিস সহায়ক, গণপূর্তের হিসাব সহকারী ও অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অফিস সহায়ক, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সাট মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর, বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির সহকারী ব্যবস্থাপকসহ বিভিন্ন চাকরির নিয়োগ পরীক্ষা রয়েছে।
ডিএমপির ডিবিপ্রধান হারুন অর রশিদ জানান, চক্রটির সদস্যরা লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। প্রথমে তারা পরীক্ষা শুরুর ১ থেকে ২ মিনিট আগে পরীক্ষার কোনো না কোনো কেন্দ্র ম্যানেজ করে প্রশ্নের ফটোকপি হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে বাইরে পাঠিয়ে দিত। বাইরে তাদের একটা টিম পাঁচ মিনিটের মধ্যে প্রশ্ন সলভ করে ফেলে। সেই উত্তর লুকানো ডিভাইসের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীকে জানিয়ে দেওয়া হতো।
হারুন অর রশিদ আরও বলেন, চাকরি ভেদে এমসিকিউ লিখিত পরীক্ষায় টিকিয়ে দেওয়ার জন্য ৩ থেকে ৫ লাখ টাকা এবং লিখিত ও ভাইভাসহ ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে নিয়েছে চক্রটি। চক্রটির অন্য সদস্যদের গ্রেফতার অভিযান চলছে বলে জানান তিনি।