সাভারের আশুলিয়ার কলেজছাত্র ফারাবি আহমেদ হৃদয় ১০ দিন আগে অপহরণের শিকার হন। মুক্তিপণ হিসেবে তার পরিবারের কাছে ৫০ লাখ টাকা দাবি করা হয়। টাকা না পেয়ে ফারাবিকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। পরে লাশ বস্তায় ভরে পুকুরে ফেলে দেন অপহরণকারীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে আশুলিয়ার মোজার মিল এলাকার শিববাড়ী ইস্টার্ন হাউজিংয়ের জলাশয় থেকে ফারাবির বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
নিহত ফারাবি আহমেদ আশুলিয়ার জামগড়া এলাকার ফজলুল হক মিয়ার ছেলে। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। ৮ মে জামগড়ার বাসা থেকে বের হওয়ার পর থেকে নিখোঁজ ছিল সে। ঘটনার পর ১১ মে আশুলিয়া থানায় নিখোঁজের বিষয়ে জিডি করে পরিবার।
গ্রেপ্তার তিনজনের একজন হলেন ময়েজ হোসেন পরাণ (২২)। তিনি মানিকগঞ্জের সদর থানার পশ্চিম দাসপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। আশুলিয়ার জামগড়ায় ভাড়া বাসায় থেকে স্থানীয় একটি আসবাবের দোকানে কাজ করতেন। গত বুধবার রাত ১০টার দিকে জামগড়া থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অপর গ্রেপ্তার সুমন মিয়া বাপ্পী (২৫) বগুড়ার সোনাতলা থানার মহেশপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। আশুলিয়ার শ্রীপুরে থেকে নির্মাণশ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন তিনি। গতকাল সকালে টাঙ্গাইলের সখীপুর থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৪। এ ঘটনায় গতকাল রাজধানীর মিরপুর থেকে আকাশ নামের আরেকজনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। আকাশ পেশায় পোশাকশ্রমিক।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৪-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুর রহমান বলেন, ফারাবির মোবাইল ফোন ব্যবহার করেই বিভিন্ন স্থান থেকে মুক্তিপণ চাওয়া হয়েছে। নিখোঁজের দিন জামগড়া এলাকার একটি বাসায় শ্বাসরোধে তাকে হত্যা করা হয়। তিনজনকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত অপর একজনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। হত্যাকাণ্ডে ফারাবির বন্ধুরাই জড়িত। তারা একসঙ্গে চলাফেরা করত। ফারাবির পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো হওয়ায় অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের পরিকল্পনা করেন জড়িত ব্যক্তিরা।
আশুলিয়া থানার এসআই আবুল হাসান বলেন, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।