বরগুনা জেলা শিক্ষা অফিসারের দ্বিতীয় স্ত্রী এবং বরগুনা সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান লাভলী আক্তার নিপার বিরুদ্ধে বরগুনা জেলা শিক্ষা অফিসের অফিস সহকারী ও কাম কম্পিউটার অপারেটর গোলাম কবিরকে তুলে নিয়ে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ।
রবিবার (১৪ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে বরগুনা টাউন হল সংলগ্ন ব্রিজের উত্তর-পশ্চিম পাড়ে সোহরাব মেম্বারের বাসায় এই ঘটনা ঘটে।
ওই এলাকার এক ব্যক্তি নাম গোপন রাখার শর্তে জানান, তিনি জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করে জানালে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় বরগুনা সদর থানা পুলিশ। পরে পুলিশ কবিরকে উদ্ধার করে সদর থানায় নিয়ে আসে।
বরগুনা জেলা শিক্ষা অফিসার মো. জসিম উদ্দিনের দ্বিতীয় বিয়ের খবর প্রথম স্ত্রীকে জানানোয় মারধরের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন গোলাম কবির।
তিনি জানান, রবিবার সকালে মায়ের জন্য ওষুধ কিনতে অফিসের বাইরে যান তিনি। এ সময় বরগুনা সদর উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানসহ কয়েকজন লোক তাকে অটোরিকশায় তুলে নিয়ে যায়। পরে বরগুনা টাউন হলসংলগ্ন ব্রিজের উত্তর-পশ্চিম পাড়ে সোহরাব মেম্বারের বাসায় নিয়ে কয়েকটি চড়থাপ্পড় দেন। জেলা শিক্ষা অফিসারের প্রথম স্ত্রীকে ফোন দিয়ে তার স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ের কথা বলায় এই ঘটনা ঘটে।
তিনি বলেন, ‘আমার এ বিষয়ে আর কোনো অভিযোগ নেই। থানা পুলিশের মাধ্যমে লিখিত দিয়ে আপস মীমাংসায় যাব।’
বরগুনা সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান লাভলি আক্তার নিপা বলেন, ‘কবির আমাকে নির্বাচন থেকেই বিরক্ত করেছে। আমি এ বিষয়ে অভিযোগ দিয়েছি।’ কবিরকে মারধরের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি উত্তেজিত হয়ে সাংবাদিককে বলেন, ‘বরগুনায় আপনি একাই সাংবাদিক, মাস্তানি করেন, এটা আমার পারিবারিক বিষয়।’
মারধরের বিষয়ে জেলা শিক্ষা অফিসার মোহাম্মাদ জসিম উদ্দিন কথা বলতে রাজি হননি। তবে তিনি জানান, বিয়ের ঘটনা সত্য। তাতে ওদের কী? ওরা কি খাওনপরণ দেয়? আমার স্ত্রী কি কোনো অভিযোগ করেছে? আমার পার্সোনাল বিষয়ে কেন আমার বউয়ের কাছে ফোন দিল? আমি এখানে ৫০টা বিয়ে করলেও সে বলার কে? পুলিশ যেহেতু কবিরকে নিয়ে এসেছে দেখি কী হয়।’
বরগুনার সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘৯৯৯ ফোন পেয়ে আমরা গিয়ে গোলাম কবিরকে টাউন হলসংলগ্ন ব্রিজের উত্তর-পশ্চিম পাড়ে সোহরাব মেম্বারের বাসায় পাই। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের সঙ্গে তার পারিবারিক কী যেন ঝামেলা ছিল। তবে এলাকার লোকজন ওখানে বসে মীমাংসা করে দিয়েছে। এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ দেওয়া হয়নি।’
সদর থানা পুলিশ জানায়, গোলাম কবির কোনো অভিযোগ দেয়নি। উভয় পক্ষই আপস মীমাংসা চেয়েছে। রাত আনুমানিক ১০টার দিকে মুচলেকা নিয়ে তাকে এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নিপাকে থানা থেকে নিজ নিজ জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।