ক্লাস শুরুর প্রায় সাড়ে তিনমাস পর বাজারজাত করা হচ্ছে একাদশ শ্রেণির পাঁচ আবশ্যিক বই। গত ৮ আগস্ট একাদশের ক্লাস শুরু হলেও পাণ্ডুলিপি ‘পরিমার্জন’ করতে দেরি এবং প্রকাশকদের গাফিলতিতে এখনও বইগুলো বাজারজাতকরণ করা যায়নি বলে জানা গেছে। প্রকাশকদের সঙ্গে চুক্তির কারণে বইগুলোর সফট কপি অনলাইনেও দিতে পারছে না এনসিটিবি।
তবে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. একেএম রিয়াজুল হাসান জানিয়েছেন, ১৫ দিন আগেই প্রকাশকদের কাছে পাণ্ডুলিপি পাঠানো হয়েছে। এ সপ্তাহেই শিক্ষার্থীরা এসব বই পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। পাঁচটি বইয়ের পাণ্ডুলিপিতে ‘কিছু চেঞ্জ’ আনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সেজন্য একটু বিলম্ব হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা কবে নাগাদ এই পাঁচটি বই বাজারে পেতে পারেন জানতে জানতে চাইলে পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহ-সভাপতি শ্যামল পাল বলেন, আমরা গত সপ্তাহে পাঁচটি বইয়ের পান্ডুলিপি পেয়েছি। সোমবার (আজ) থেকেই শিক্ষার্থীরা বই কিনতে পারবেন বলে আশা করছি।
সমিতির অপর একজন নেতা জানান, সংশ্লিষ্ট প্রকাশকরা ইতোমধ্যে পাঁচটি বই বাজারজাতকরণের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। প্রতিবছরই এসব বই বাজারজাতকরণের আগে ‘নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর সহায়তা’ চাওয়া হয়। এনসিটিবি’রও সহযোগিতা প্রয়োজন। এসব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করতে দু’একদিন লাগতে পারে।
এনসিটিবি এবার যথাসময়েই আবশ্যিক পাঁচটি বিষয়ের প্রায় ৩১ লাখ বই ছাপার দরপত্র আহ্বান করেছিলো। ছাত্র জনতার অভ্যূত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটলে অন্তর্বর্তী সরকার বইগুলোর পাণ্ডুলিপি ‘সংশোধন ও পরিমার্জনের’ উদ্যোগ নেয়।
এনসিটিবি সূত্র জানিয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকারের সিন্ধান্ত অনুযায়ী এবার একাদশ শ্রেণির আবশ্যিক বাংলা সাহিত্য পাঠ, বাংলা সহপাঠ, ইংরেজি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বইয়ের বাংলা ও ইংরেজি ভার্সনের পাণ্ডুলিপিতে ‘প্রয়োজনীয়’ সংশোধন ও পরিমার্জন আনা হয়েছে।
জানা গেছে, চলতি শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণির বাংলা বইয়ের পাঠ্যসূচি থেকে বাদ পড়ছেন শেখ মুজিবুর রহমান, অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল, দিলওয়ার ও মহাদেব সাহা। ইংরেজি বইয়ের কতগুলো অধ্যায় পুরোপুরি বাদ দেয়া হয়েছে এবং নম্বর বিভাজনেও পরিবর্তন আনা হয়েছে।
বইয়ের পরিধিও বেড়েছে। গত বছর ইংরেজি বই ছিলো ২৭ ফর্মার, এ বছর হচ্ছে ৩৭ ফর্মার। সেজন্য বইয়ের দামও কিছুটা বেড়েছে।
বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ থেকে ‘বায়ান্নর দিনগুলো’, মুহম্মদ জাফর ইকবালের ‘মহাজাগতিক কিউরেটর’, দিলওয়ারের ‘মানুষ সকল সত্য’ এবং মহাদেব সাহার ‘শান্তির গান’ বাদ পড়েছে।
জানা গেছে, সর্বশেষ ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে একাদশ শ্রেণির পাঠ্যবই পরিবর্তন করা হয়েছিলো। ২০২৬ খ্রিষ্টাব্দে এই স্তরের বই পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত থাকলেও রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কারণে তা বাতিল হয়েছে।