অবশেষে বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন নোটিশ পাওয়া শিক্ষক - দৈনিকশিক্ষা

অবশেষে বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন নোটিশ পাওয়া শিক্ষক

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি |

অবশেষে বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার সাজানপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রনি প্রতাপ পাল। শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) রাত ১১টার দিকে কালিহাতী উপজেলার মগড়া গ্রামের সত্যপালের মেয়ে স্বর্না পালের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন রনি। বিয়ের অনুষ্ঠানে দু’পক্ষের পরিবারের লোকজন ছাড়াও রনির স্কুলের শিক্ষক ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। 

জানা যায়, চলতি বছরের ২৬ জুলাই সাজানপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম তার প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষক রনি প্রতাপ পালকে ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে বিয়ে করতে নোটিশ দেন। বিষয়টি জানাজানি হলে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠে। এরপর নিয়মবহির্ভূত বিয়ের নোটিশ দেয়ায় ও আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে একাধিক সরকারি তদন্ত শুরু হয়, যা এখনো চলমান। এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষকের বহিষ্কার চেয়ে ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক ছাড়াও সাবেক শিক্ষকগণসহ স্থানীয়রা মানববন্ধন কর্মসূচিও পালন করেন।

এদিকে, গত ২২ সেপ্টেম্বর সহকারী শিক্ষক রনি ও স্বর্নার আশীর্বাদ সম্পন্ন হয়। সবশেষ শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) রাতে জাঁকজমকভাবে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। রনির বড় ভাই রানা পাল বলেন, দুই পক্ষের সম্মতিতে রনি ও স্বর্নার বিয়ে ঠিক করা হয়। তারা দুজনই খুশি। হিন্দু ধর্মের রীতি অনুসরণ করে বিয়ে করতে হয়, তাই তার বিয়ে করতে দেরি হয়েছে। আমরা ওই ঘটনার আগে থেকেই পারিবারিকভাবে বিয়ে করানোর জন্য চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমাদের রীতিনীতির সঙ্গে পড়েনি বলে এত দেরি হলো। অবশেষে বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে।

বর রনি প্রতাপ পাল বলেন, কোনো চাপে নয়, পরিবারের পছন্দেই বিয়ে করতে এসেছি। মূলত প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম ঢাকতে আমাকে বিয়ে করার জন্য নোটিশ দেয়া হয়। নোটিশ দেয়ার আগে থেকেই বিয়ের জন্য পাত্রীর সন্ধানে ছিল পরিবারের লোকজন। কিন্তু সময়মতো পাওয়া হয়নি। এখন আর স্যার আমাকে এই কথা বলতে পারবে না। বর্তমানে প্রধান শিক্ষক শোকজ অবস্থায় আছেন। আমি স্যারকেও বউভাতের দাওয়াত দিয়েছি। আমাদের আগামী দিনের জন্য সবার কাছে আশীর্বাদ চাই।

কনে স্বর্না পাল বলেন, আমি রনি প্রতাপকে বিয়ে করে অনেক খুশি। পরিবারের লোকজনের কাছে শুনেছি- তিনি অনেক ভালো মানুষ। তার সঙ্গে আমি সুখী হবো আশা করছি।

এছাড়া রনির সহকর্মী ও সাজানপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পঙ্কজ বলেন, রনি স্যারের বিয়ে হওয়াতে আমরা অনেক খুশি। এখন কেউ আর স্যারকে এই ধরণের কথা বলতে পারবে না।

উল্লেখ্য, ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে সহকারী শিক্ষক পদে ওই বিদ্যালয়ে যোগ দেন রনি প্রতাপ পাল। গত ২৬ জুলাই তাকে নোটিশ দেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। নোটিশে বলা হয়, ‘বিদ্যালয়ে যোগদানের পর আপনাকে বারবার মৌখিকভাবে তাগিদ দিয়েছি বিবাহ করার জন্য। কিন্তু অতীব দুঃখের বিষয় কয়েক বছর অতিবাহিত হওয়ার পরও আপনি বিবাহ করেননি। বিদ্যালয়টিতে সহশিক্ষা চালু রয়েছে। অভিভাবকরা অবিবাহিত শিক্ষক নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারেন। সুতরাং বিদ্যালয়ের বৃহত্তর স্বার্থে নোটিশ প্রাপ্তির ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে বিবাহের কার্য সম্পন্ন করে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার জন্য আপনাকে বিশেষভাবে পাক্কা নির্দেশ প্রদান করা হলো।’

নোটিশটি পাওয়ার দুই দিন পর সহকারী শিক্ষক রনি প্রতাপ প্রধান শিক্ষককে লিখিত জবাব দেন। জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার অভিভাবকরা আমার বিয়ের চেষ্টা করছেন। কিন্তু বাংলাদেশের হিন্দুদের বিয়ের পাত্রপাত্রী বাছাইয়ে গাত্র বা বর্ণের বিষয় রয়েছে। এছাড়া হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা শ্রাবণ থেকে কার্তিক পর্যন্ত বিয়ে করাটা শুভ মনে করে না। সুতরাং পারিবারিক ও ধর্মীয় রীতির কারণে আগামী অগ্রহায়ণ মাসে আমার অভিভাবকেরা আমাকে বিবাহ করাবেন বলে জানিয়েছেন।

শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি - dainik shiksha শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবি কারিগরি শিক্ষকদের অক্টোবর মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha কারিগরি শিক্ষকদের অক্টোবর মাসের এমপিওর চেক ছাড় সরকারি কর্মচারীদের ৯ দফা নির্দেশনা - dainik shiksha সরকারি কর্মচারীদের ৯ দফা নির্দেশনা স্কুল-কলেজে বেতন ছাড়া সব ফি বেঁধে দিলো সরকার - dainik shiksha স্কুল-কলেজে বেতন ছাড়া সব ফি বেঁধে দিলো সরকার সব শিক্ষকের স্বার্থ সংরক্ষণ করে বদলির নীতিমালা : সাক্ষাৎকারে শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha সব শিক্ষকের স্বার্থ সংরক্ষণ করে বদলির নীতিমালা : সাক্ষাৎকারে শিক্ষা উপদেষ্টা ঢাবিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রেখেই ভর্তি কার্যক্রম - dainik shiksha ঢাবিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রেখেই ভর্তি কার্যক্রম ক্যামব্রিয়ানের বাশারকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত - dainik shiksha ক্যামব্রিয়ানের বাশারকে গ্রেফতারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: অষ্টম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি - dainik shiksha শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: অষ্টম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা কল্যাণের হবে না: ছাত্রদল সম্পাদক - dainik shiksha ছাত্ররাজনীতি বন্ধ করা কল্যাণের হবে না: ছাত্রদল সম্পাদক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0048501491546631