তিন বছর তদবির করেও মৃত শিক্ষক শ্যালকের অবসর সুবিধার টাকা না পাওয়া সংক্রান্ত জাতীয় সংসদে দেওয়া একজন সংসদ সদস্যের বক্তব্যকে অসত্য বলেছেন বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ডের সচিব অধ্যক্ষ শরীফ আহমদ সাদী। রোববার (৩০ জুন) রাতে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে দেয়া একান্ত সাক্ষাতকারে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন ৩০ জুন জাতীয় সংসদে নাটোর-১ আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম-এর ওই দাবিকে।
সংসদ সদস্য সংসদে বলেন, ‘সর্বক্ষেত্রেই দুর্নীতি। শিক্ষায় ব্যাপক দুর্নীতি। এটা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। টাকা ছাড়া কোনও শিক্ষক অবসর ভাতা পাচ্ছেন না। আমার শ্যালক শিক্ষক ছিলেন, মারা গেছেন। আমি নিজে তিন বছর তদবির করলেও অবসর ভাতা পাননি। টাকা ছাড়া কিছুই হয় না। এটা সর্বগ্রাসী দুর্নীতি। এই দুর্নীতির কারণে গোটা জাতি গ্রাস হয়ে যাচ্ছে। শিক্ষিত বেকার যুবকরা আত্মহত্যা করছে।’ এমন বক্তব্য বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
অবসর বোর্ডের সচিব শরীফ আহমদ সাদী দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এমপি সাহেবের শ্যালকের টাকা ২ বছর ৪ মাস আগে দেয়া হয়েছে। অকালে মৃত্যুবরণকারী শিক্ষক আবু মাইনুল হক এর কথা বলে নাটোর- ১ আসনের স্বতন্ত্র এমপি আবুল কালাম সাহেব সংসদে একটা অসত্য অভিযোগ আনলেন।’
‘চার বছর হয়ে গেছে আমি (এমপি) নিজে তদ্বির করেও আমার শ্যালক মৃত মাইনুল হক এর অবসর ভাতার টাকা পাচ্ছি না,; সংসদ সদস্যের এমন দাবি খণ্ডন করে শরীফ সাদী বলেন, ‘অথচ সেই শিক্ষকের (এমপির শ্যালক) পাওনা টাকা আবেদনের ১ বছর ২ মাসের মধ্যেই পেয়ে গেছেন। ’
শরীফ সাদী বলেন, অবসর বোর্ডে অনলাইনে ৩ আগস্ট ২০২০ সালে আকস্মিক হার্ট এট্যাকে মৃত শিক্ষক মাননীয় সংসদ সদস্য আবু কালাম সাহেবের শ্যালকের স্ত্রী (নমিনি) মোছা. রূপালী খাতুনের পক্ষে আবেদনটি করা হয়েছিল। অনলাইনে আবেদন করার কয়েকমাস পর এমপি সাহেবের মামাতো ভাই জামিরুল মাস্টার সাহেব অবসর বোর্ড অফিসে আসেন এই আবেদনের কপি নিয়ে। তার অনুরোধে অগ্রাধিকারভিত্তিতে মৃত শিক্ষক আবু মাইনুল হক এর স্ত্রী মোছা. রূপালী খাতুনের একাউন্টে তার প্রাপ্য ১০ লক্ষ ১১ হাজার ৯ শত ৭৮ টাকা গত ১৬/০১/২০২২ খ্রি. তারিখে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এখানে কোনো নয়-ছয় হয়েছে কিনা তা এমপি সাহেবের মামাতো ভাই জামিরুল মাস্টারই বলতে পারবেন। দৃঢ়তার সাথে বলতে পারি, অবসর বোর্ড স্বচ্ছতার সাথে কাজ করে। চ্যালেঞ্জ করে বলছি,এমপি সাহেবের অভিযোগের কোনও সত্যতা নেই।