গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলার চারটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জালিয়াতির মাধ্যমে প্রধান শিক্ষক হিসেবে ৯৬ মাস ধরে বেতনভাতা উত্তোলন করে আসছিলেন। সম্প্রতি বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা অফিসারের দৃষ্টিগোচর হলে সবার টনক নড়ে। তিনি ওই চার শিক্ষককে তাদের উত্তোলিত অতিরিক্ত অর্থ ফেরত দেয়ার নির্দেশ দিলে তারা গত জুলাই মাস থেকে বেতন ভাতাদি উত্তোলন থেকে বিরত রয়েছেন। ফলে এ বিষয়টি নিয়ে এক জটিল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
সাদুল্যাপুর উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে বেসরকারি ও কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো সরকারীকরণ করা হলে সাদুল্যাপুর উপজেলার আরাজী তরফ কামাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মোস্তাফিজুর রহমান, মধ্য কিসামত দশলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের লুৎফর রহমান, চকনদী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাইফুর রহমান ও তরফবাজিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাদেকুল ইসলাম সহকারী শিক্ষক হিসেবে গেজেটভুক্ত হন। কিন্তু ওই চার সহকারী শিক্ষক স্থানীয় শিক্ষা বিভাগের যোগসাজশে ২০১৪ সাল থেকে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে বেতন ভাতাদি উত্তোলন করে আসছিলেন। বিষয়টি গত জুলাই মাসে বর্তমান উপজেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুল্লাহিশ শাফীর কাছে ধরা পড়ে। তিনি সহকারী শিক্ষক হিসেবে গেজেটভুক্ত হওয়া সত্ত্বেও কেন তারা প্রধান শিক্ষক হিসেবে বেতন ভাতাদি নিচ্ছেন- এ মর্মে গত জুলাই মাসে তাদের নামে পত্র দেন। তিনি উত্তোলিত অতিরিক্ত অর্থ সরকারি কোষাগারে ফেরত দেয়ারও নির্দেশ দেন। এতেও ওই চার শিক্ষকের টনক না নড়লে তাদের বেতনভাতাদি গত জুলাই মাস থেকে স্থগিত এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা চেয়ে গাইবান্ধা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর পত্র প্রেরণ করা হয়।
এ ব্যাপারে মধ্য কিসামত দশলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক লুৎফর রহমান জানান, ম্যানেজিং কমিটি (এমএমসি) জাতীয়করণকালে তাকে প্রধান শিক্ষক হিসেবেই নিয়োগ দেন। তৎকালীন উপজেলা শিক্ষা অফিসার সেটি অনুমোদনও দেন। সেই থেকে তিনি প্রধান শিক্ষক হিসেবে বেতনভাতাদি উত্তোলন করছেন। এতে তার কোনো অপরাধ আছে বলে তিনি মনে করেন না।