১৯২৪ খ্রিষ্টাব্দের পর ২০২৪। ঠিক ১০০ বছর পর আবার ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে অলিম্পিক হচ্ছে। অন্য অলিম্পিকের মতো প্যারিসেও বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় জয়ীরা সোনা, রুপো এবং ব্রোঞ্জের পদক পাবেন। কিন্তু এই পদকগুলো আসলে কী দিয়ে তৈরি করা হয়? এ বারের অলিম্পিকের পদকের বিশেষত্বই বা কী?
অলিম্পিকে স্বর্ণপদকজয়ীদের যে সোনার পদক দেয়া হয় তা আদতে সম্পূর্ণ সোনা দিয়ে তৈরি করা হয় না। স্বর্ণপদকের বেশির ভাগ রুপো দিয়ে তৈরি। রূপোর ওপরে সোনার সরু পাত দেয়া হয় পদকে।
ইন্টারন্যাশনাল অলিম্পিক কমিটির তরফ থেকে এই পদকগুলোর নকশা এবং নির্মাণ সংক্রান্ত যাবতীয় নিয়মকানুন তৈরি করা হয়। তাদের নিয়মানুযায়ী, স্বর্ণপদকের বেশির ভাগ অংশ যে ধরনের রুপো দিয়ে তৈরি, তাতে বিশুদ্ধতার পরিমাণ অন্তত ৯২.৫ শতাংশ হতে হবে। রুপোর ওপর অন্তত ছ’গ্রাম ওজনের বিশুদ্ধ সোনার পাত দিয়ে মুড়ে দেয়া হয় স্বর্ণপদকটি।
অলিম্পিকে যে রৌপ্যপদক দেয়া হয়, তার পুরোটাই অবশ্য খাঁটি রুপো দিয়ে তৈরি। প্যারিস অলিম্পিকে মাত্র দু’দিনের ব্যবধানে দু’টি ব্রোঞ্জ পদক জিতে ইতিহাসের পাতায় নাম লিখিয়েছেন মনু ভাকের। ১০ মিটার এয়ার পিস্তলে ব্যক্তিগত ইভেন্টের পর মিক্সড ইভেন্টেও ব্রোঞ্জ জিতেছেন তিনি। প্রথম মহিলা ভারতীয় ক্রীড়াবিদ হিসাবে একই অলিম্পিকে দু’টি পদক জিতলেন মনু। ব্রোঞ্জ পদকের অধিকাংশই তামা দিয়ে তৈরি। তা ছাড়া ব্রোঞ্জ পদক নির্মাণে লোহা এবং দস্তারও প্রয়োজন হয়।
প্রতিটি অলিম্পিক গেমসের পদকের নকশা আলাদা হয়। প্যারিসও ব্যতিক্রম নয়। এ ছাড়াও একটি বিশেষত্ব রয়েছে এ বারের অলিম্পিকের পদকে। প্যারিস অলিম্পিকে যে পদকগুলো প্রতিযোগীদের দেয়া হচ্ছে, তার মধ্যে থাকছে ইতিহাসের ছোঁয়া।
বিশ্বের সেরা সৃষ্টিগুলোর অন্যতম আইফেল টাওয়ার। বহু ইতিহাসের সাক্ষী প্যারিসের আইফেল টাওয়ারের ছোঁয়া থাকছে এ বারের অলিম্পিকের পদকে। যে লোহা দিয়ে আইফেল টাওয়ার তৈরি করা হয়েছে, সেই লোহা দিয়েই তৈরি করা হয়েছে অলিম্পিকের প্রতিটি পদক।
অলিম্পিকের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো দেশ তাদের জাতীয় স্মৃতিস্তম্ভের অংশ ব্যবহার করছে। আয়োজকেরা জানিয়েছেন, প্রতিটি পদকে আইফেল টাওয়ারে ব্যবহৃত ১৮ গ্রাম লোহা থাকছে। পদকের গোল চাকতির মাঝে থাকছে একটি ষড়ভুজাকৃতি অংশ। পদকের মাঝের ওই অংশে ব্যবহৃত হয়েছে ওই লোহা। ফ্রান্সের একটি অলঙ্কার নির্মাণ সংস্থা এ বার প্যারিস অলিম্পিকের পদক তৈরি করেছে।