গাজীপুরের শ্রীপুরে আচরণবিধি ভঙ্গের দায়ে ৩ শিক্ষককে শোকজ করেছে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি। উপজেলার টেংরা এলাকার আলহাজ নওয়াব আলী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের মিটিং চলাকালীন অসদাচরণ ও ভুইফোঁড় পত্রিকায় কথিত সাংবাদিকতার নামে ম্যানেজিং কমিটিকে হুমকি ধমিক ও চাঁদাবাজি করার অভিযোগ আবুল বাসার, কামরুজ্জামান এবং মাসুদ রানা নামে বিদ্যালয়টির তিন শিক্ষককে শোকজ করা হয়।
জানা যায়, বিদ্যালয়ের ম্যনেজিং কমিটির আলোচনাসভা চলাকালে শোকজপ্রাপ্ত ওই তিন শিক্ষক ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিসহ অন্যান্য সদস্যদের সাথে খারাপ আচরণ করেন। এছাড়া মাসুদ রানা ভুইফোঁড় পত্রিকার কার্ড নিয়ে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে নানা অপকর্মে লিপ্ত। তার বিরুদ্ধে নারী ও শিশুর মামলায় জেল খাটার অভিযোগ রয়েছে। বরখাস্তকালীন তিনি বেতন-ভাতা তুলেছেন। সেই টাকা ফেরত দেননি। ফলে বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদ অসদাচরণের ব্যাখ্যা চেয়ে শোকজ করে। পরবর্তীতে তাদেরকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের মাধ্যমে ভুল শিকার করে ক্ষমা চাইতে বলা হলেও তাঁরা সে সিদ্ধান্ত মানেনি।
তবে এ বিষয়গুলো এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রউফ । তিনি জানান, এসব বিষয় বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীন। এসব বিষয় নিয়ে আমি কথা বলতে চাই না। নানা অভিযোগে তাদেরকে শোকজ করা হয়েছে। এর জবাব দেবেন তারা। জবাবে ম্যানেজিং কমিটি সন্তুষ্ট হলে বিষয়টি এখানেই শেষ হয়ে যাবে। তবে কমিটির সদস্যবৃন্দ সন্তুষ্ট না হলে তখন আমরা বিষয়টি বিস্তারিত জানাতে পারবো। ম্যানেজিং কমিটির বিরুদ্ধে মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। মামলাটির সাথে এ সংক্রান্ত কোন যোগসাজশ নেই বলে জানান তিনি।
অপরদিকে বিদ্যালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন আজীবন দাতা সদস্য জানান, বর্তমান সভাপতি ক্ষমতার দাপটে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচিত হয়েছেন। আমরা বিদ্যালয়ের জন্মলগ্ন থেকেই বিদ্যালয়টির উন্নয়নের স্বার্থে কাজ করেছি। বর্তমান সভাপতি বিদ্যালয়টিকে তাঁর এককেন্দ্রীক ক্ষমতাবলে পরিচালনা করতে চাচ্ছে। সে জন্য বিদ্যালয়টির কিছু শিক্ষক সবসময় সকল সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকছে। আবার কিছু শিক্ষক অকপটে সকল সুবিধা গ্রহণ করছে। যার ফলে সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষকরা বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের বিরোধিতা করছে। যার ফলে এমন অনাকঙ্খিত ঘটনাটি ঘটেছে।
বিদ্যালয়টির সভাপতি জানান, অভিযুক্তরা অপরাধ করেছে তাই তাদেরকে শোকজ করা হয়েছে। আমরা এখানে কোনধরণের অনিয়ম করছি না।
এ বিষয়ে শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শোভন রাংশা বলেন, বিষয়টি শুনেছি এবং উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে বলেছি বিষয়টি তদন্ত করে ব্যাবস্থা গ্রহন করার জন্য।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম জানান, বিষয়টি শুনেছি। অভিযুক্ত ওই তিন শিক্ষক আমার কাছে এসেছিলেন। আমি তাদেরকে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাথে কথা বলে মিমাংসা করার কথা বললে তারা সে সিদ্ধান্তও মানেননি। এর পরবর্তীতে তারা বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন শুনেছি।
তিনি বলেন, মাসুদ রানা নামের একজন সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত। এমপিওভুক্ত শিক্ষক অন্য কোনো পেশায় যু্ক্ত হতে পারেন না। তার বিরুদ্ধে নারী শিশুর মামলাও রয়েছে।