রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার ৪৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ মান্নানকে প্রকাশ্যে পিস্তল উঁচিয়ে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার দুপুরে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ঢুকে এ হুমকি দেন একই থানার ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রিপন হোসেন ফাহিম। বৃহস্পতিবার ওই ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজ হাতে আসে।
ভিডিওতে দেখা যায়, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের একটি কক্ষের সামনে উপস্থিত হয়ে ফাহিম উত্তেজিত হয়ে কথা বলছেন। এক পর্যায়ে ওই ছাত্রলীগ নেতাকে আগ্নেয়াস্ত্র বের করে কক্ষের ভেতরে থাকা প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা এম এ মান্নানের দিকে তাক করে হুমকি দিতে দেখা যায়।
সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে এম এ মান্নান বলেন, ‘‘আমি ২২ বছর ধরে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি। আমার অনেক সুনাম আছে। এই এলাকায় সব মাদক বেচাকেনা ফাহিম নিয়ন্ত্রণ করেন। আমিসহ সাধারণ মানুষ তাঁর অত্যাচারে অতিষ্ঠ। এসবের প্রতিবাদ করায় প্রথমে তিনি আমার ম্যানেজারকে পিস্তল দেখিয়ে হত্যার হুমকি দেন। এর পরে আবার অফিসে এসে পিস্তল তাক করে আমাকে হত্যার হুমকি দেন। তখন ফাহিম বলেন, ‘তোর মতো সভাপতি আমি গুনি না। গুলি কইরা মাইরা ফেলমু।’ এ ঘটনায় আমি থানায় অভিযোগ দেব।”
ছাত্রলীগ নেতা ফাহিমের বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী থানা এলাকার ফুটপাতে দোকান বসিয়ে চাঁদা আদায়, মাদক ব্যবসাসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযোগের বিষয়ে ফাহিম বলেন, তিনি আমার বাবাকে ফোন দিয়ে গালাগাল করেছিলেন। বাবাকে ফোন দিয়ে গালাগাল করলে কারও মাথা ঠিক থাকে না। আমি গিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসা করি, কাকা, কী হইছে? এর পর তিনি আমার ওপরও চড়াও হন। তখন আমি বলি, কাকা, আপনাকে তো সম্মান করি, আপনি এভাবে কথা বলতে পারেন না। তখন তাঁর সঙ্গে একটু বাগ্বিতণ্ডা হয়। আমি পিস্তল কই পাব? আমার কাছে তো এটি নেই।
ভিডিওতে কালো রঙের পিস্তল দেখা গেছে জানালে তিনি বলেন, ‘ওইখানে আমরা বন্ধুরা মিলে আড্ডা দিই। একদিন বাচ্চারা খেলনা পিস্তল নিয়ে খেলছিল। আমি সেটি নিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে মজা করেছিলাম, টিকটক ভিডিও বানিয়েছিলাম। সেটির ভিডিও দিয়েই হয়তো কেউ ষড়যন্ত্র করছে আমার বিরুদ্ধে।’
এ সময় তিনি চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসার অভিযোগও অস্বীকার করেন।
জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সভাপতি রাজিবুল ইসলাম বাপ্পি বলেন, আমরা দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে কোনো অন্যায়কে প্রশ্রয় দিইনি আর ভবিষ্যতেও দেব না। ভিডিও ফুটেজটি পেলে তা যাচাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ডিএমপির যাত্রাবাড়ী থানার ওসি মাহফুজুল আলম বলেন, এ রকম কোনো ঘটনা আমার জানা নেই। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।