নাটোরে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (১ এপ্রিল) দুপুর আড়াইটার দিকে জেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
এসময় উভয়পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ফলে অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন।
সংঘর্ষে কাফুরিয়া ইউনিয়ন যুবদলের সহ-সভাপতি শরিফুল ইসলাম শরিফ, যুবদল নেতা রনি ব্যাপারী গুরুতর আহত হন। এছাড়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম বাচ্চুসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ৩০ নেতাকর্মী আহত হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে শরিফুল ইসলাম শরিফ ও রনি ব্যাপারীকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
অপরদিকে, আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন বিপ্লব ও নাটোর শহর যুবলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সায়েম হোসেন উজ্জল আহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে। বিপ্লব ও উজ্জল নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
প্রায় আধা ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষের পর দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে জেলা বিএনপি। এসময় দলটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, তাদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী নাটোর উপশহর মাঠে মঞ্চ তৈরির সময়ই বৃহস্পতিবার রাতে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা হামলা ও অগ্নিসংযোগ করেন। শান্তি রক্ষার জন্য তারা উপশহর মাঠ ছেড়ে দিয়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনে ফুটপাতে খুব সংক্ষিপ্ত পরিসরে অবস্থান ধর্মঘট করেন।
শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে তাদের অবস্থান ধর্মঘটে বক্তব্য দিচ্ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু। এসময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাদের দলীয় কার্যালয় থেকে একটি বড় মিছিলসহ বিএনপি অফিসের দিকে আসতে থাকেন। নাটোর বিদ্যুৎ অফিসের সামনে পুলিশ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাধা দিলে তারা পুলিশি ব্যারিকেড ভেঙে বিএনপির অবস্থান কর্মসূচিতে হামলা করেন। এসময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও হামলার ঘটনা ঘটে।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম বাচ্চু বলেছেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে থাকার জন্য জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক নিজের অবস্থান ও ক্ষমতা জানান দিতে বিএনপির ওপরে একের পর এক হামলা করছেন। মত প্রকাশের নাগরিক অধিকারটুকুও আওয়ামী লীগ কেড়ে নিয়েছে।
তবে এ বিষয়ে নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান বলেন, পূর্বনির্ধারিত নাটোর উপশহর মাঠের শান্তি সমাবেশ করার জন্য আমরা মিছিলসহ যাওয়ার সময় পুলিশ বাধা দেয়। পুলিশি বাধার কারণে সেখানেই আমরা শান্তি সমাবেশ করছিলাম। বিএনপি নেতাকর্মীরা এসময় শান্তি সমাবেশে ইটপাটকেল ছুঁড়ে হামলা করে।
নাটোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এ টি এম মাইনুল ইসলাম বলেন, শহরের আলাইপুর এলাকায় বিএনপি ও আওয়ামী লীগ উভয়েই সমাবেশ ডেকেছিল। সমাবেশ চলাকালে দুপক্ষই ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।