আগামী দুই বছরে ৫ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে বলে জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। শুক্রবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় যুব দিবস ২০২৪ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা জানান তিনি।
এ সময় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, আমরা সাংবিধানিক ও কাঠামোগত সংস্কারের মাধ্যমে এমন একটি রাষ্ট্র গড়ে তুলতে চাই; যেখানে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে দেশের সকল নাগরিকের অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিত হবে, সমাজে সমতা প্রতিষ্ঠিত হবে, কেউ তার লিঙ্গ ,ধর্ম, বর্ণ এবং ভাষার কারণে নিগৃহীত ও বঞ্চিত হবে না। এক্ষেত্রে অগ্রপথিকের ভূমিকা পালন করবে আজকের ছাত্র-তরুণ-যুবসমাজ।
তিনি বলেন, জাতীয় যুব দিবস-২০২৪ উপলক্ষে আমরা কিছু কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। এর অংশ হিসেবে যারা ৫ আগস্ট অভ্যুত্থানের পর দেশের আইনশৃঙ্খলা, ট্রাফিক সবকিছুর দায়িত্ব নিয়েছিলেন তাদেরকে সরকারের সকল কার্যক্রমে যুক্ত করা আমাদের অন্যতম উদ্দেশ্য। তারই অংশ হিসেবে ট্রাফিক কার্যক্রমের দায়িত্ব নেওয়া শিক্ষার্থীদের আরও উন্নত প্রশিক্ষণের আয়োজন করে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর এবং সেই প্রশিক্ষণকে কাজে লাগানোর জন্য সহায়ক পুলিশ হিসেবে তাদের নিয়োগ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, জাতীয় যুব দিবস উপলক্ষে ৬৪টি জেলায় ৬৪টি খাল ও জলাশয় পরিচ্ছন্নকরণ কর্মসূচি আমরা হাতে নিয়েছি। এর পাশাপাশি আমাদের আয়োজনের অংশ হিসেবে রয়েছে জাতীয় যুব মেলা। আগামীকাল (২ নভেম্বর) থেকে সাত দিনব্যাপী সেই যুব মেলা বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হবে।
উপদেষ্টা বলেন, আমাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প রয়েছে। বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতায় কোনো প্রকার প্রশিক্ষণ, শিক্ষা বা এ ধরনের কার্যক্রমে যারা যুক্ত নেই, এমন ৯ লাখ যুবকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার একটি কার্যক্রম আমাদের আসছে। আমি আহ্বান জানাবো, যুবক ও যুব নারীদের এই প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করে নিজেদের যোগ্য করে গড়ে তোলার এবং তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর আধুনিক প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে নিজেকে যোগ্য করে গড়ে তোলার জন্য।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, তরুণদের নিয়ে শুধু বাংলাদেশের মানুষই নয় সমগ্র পৃথিবী নতুন করে ভাবছে, অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছে। কারণ বাংলাদেশের তরুণরা এই জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে পৃথিবীকে একটি নতুন পথ দেখিয়েছে।
উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, তারুণ্যের ভিতরে যে উদ্যম, স্পৃহা ও ইচ্ছাশক্তি রয়েছে এই সকল গুণাবলীকে যদি আমরা কাজে লাগাতে পারি তাহলে অবশ্যই বাংলাদেশ একটি ভালো জায়গায় যাবে। এই জুলাই অভ্যুত্থানের সকলেই রাস্তায় নেমে এসেছিল। একদিকে ছিল দেশমাতৃকা অপরদিকে ছিল মৃত্যু। মাতৃভূমি অথবা মৃত্যু কোনো একটাকে বেছে নিয়ে আমাদের লড়তে হয়েছিল। ফলে আমরা মনে করি আমাদের এই লড়াইটা চলমান এবং আমরা অবশ্যই আমাদের মাতৃভূমিকে রক্ষা করে নতুন করে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়া করাবো।
এরপর উপদেষ্টাদ্বয় জাতীয় যুব দিবস ২০২৪ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত যুব মেলা পরিদর্শন করেন। অনুষ্ঠানে ১২ জন সফল আত্মকর্মী ও ৩ জন শ্রেষ্ঠ যুব সংগঠককে জাতীয় যুব পুরস্কার ২০২৪ প্রদান করা হয়।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. গাজী মো. সাইফুজ্জামানসহ মন্ত্রণালয় ও দপ্তর সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।