সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয় স্কিম’ বাতিলসহ তিন দফা দাবিতে আজ মঙ্গলবার (২৫ জুন) থেকে চারদিন ব্যাপী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের কর্মবিরতি কর্মসূচি শুরু হচ্ছে। এ সময় শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেওয়া থেকে বিরত থাকলেও পরীক্ষাসমূহ কর্মবিরতির আওতামুক্ত থাকবে।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের ডাকে ২৭ জুন পর্যন্ত অর্ধদিবস কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন করবেন তারা। এরপর ৩০ জুন পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করা হবে।
সোমবার (২৪ জুন) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফেডারেশনের মহাসচিব অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া।
তিনি জানান, সরকারের পক্ষ থেকে তাদের যে দাবি ছিল সে ব্যাপারে কোনো ইতিবাচক সাড়া আসেনি। তাই পূর্বঘোষিত কর্মসূচি বহাল থাকবে। এসময় শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেওয়া থেকে বিরত থাকলেও পরীক্ষাসমূহ কর্মবিরতির আওতামুক্ত থাকবে বলে তিনি জানান।
শিক্ষকদের দাবি, নতুন এই স্কিম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি করবে। গত দু’মাস ধরে বিবৃতি, সংবাদ সম্মেলন, মানববন্ধনের পরও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের উদ্যোগ না নেওয়ায় চলতি মাসের শুরুতে মাঠে নেমেছেন তারা।
এরই অংশ হিসেবে গত ৪ জুন সকাল ৮টা ৩০ মিনিট থেকে দুপর ১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত দেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকরা অর্ধদিবস কর্মবিরতির পালন করেন। এদিকে, ওইদিন দুপুরে কর্মসূচি শেষে ফেডারেশনের নেতারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এক সংবাদ সম্মেলনে সরকারকে সময় বেঁধে দিয়ে আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন।
তাদের আল্টিমেটাম অনুযায়ী, ২৪ জুনের মধ্যে সর্বজনীন পেনশন স্কিম সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন প্রত্যয় স্কিম প্রত্যাহার এবং পূর্বের পেনশন স্কিম চালু রাখা; সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতনস্কেল প্রবর্তন কার্যকর করা না হলে তারা কর্মবিরতিতে যাবেন বলে জানিয়েছিলেন।
এখন ঘোষণা অনুযায়ী, ২৫, ২৬ ও ২৭ জুন অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করবেন শিক্ষকরা। এছাড়াও, ২৮ ও ২৯ জুন শুক্রবার ও শনিবার ছুটি থাকায় পরদিন ৩০ জুন শিক্ষকরা ৮টা ৩০ মিনিট থেকে ৩টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করবেন। তবে, পরীক্ষাসমূহ কর্মবিরতির আওতামুক্ত থাকবে।
এরপরও দাবি আদায় না হলে আগামী ১ জুলাই থেকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালিত হবে বলে জানিয়েছিলেন সংগঠনটির নেতারা।
প্রত্যয় স্কিম নিয়ে জারি করা প্রজ্ঞাপন ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তির তথ্যানুযায়ী ১ জুলাই বা তার পরে স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থার চাকরিতে যারা যোগদান করবেন, তাদের বাধ্যতামূলকভাবে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় প্রত্যয় স্কিমে যুক্ত করা হবে। স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এর অন্তর্ভুক্ত হবে। এছাড়াও ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ থেকে সরকারি কর্মকর্তারা এ পেনশনের অন্তর্ভূক্ত থাকবে।