বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের ৫১তম শাহাদাতবার্ষিকী আজ ১৪ ডিসেম্বর।
১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে চাঁপাইনবাবগঞ্জের মহানন্দা নদীর দক্ষিণ তীরে রেহাইচর এলাকায় পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে শহীদ হন ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর। তার মরদেহ সোনামসজিদ প্রাঙ্গণে সমাহিত করা হয়।
বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে চরম সাহসিকতা আর অসামান্য বীরত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ যে সাতজন বীরকে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সামরিক সম্মান ‘বীর শ্রেষ্ঠ’ উপাধিতে ভূষিত করা হয় তিনি তাদের অন্যতম। তার সম্মানে ঢাকা সেনানিবাসের প্রধান ফটকের নাম ‘শহীদ জাহাঙ্গীর গেট’ নামকরণ করা হয়েছে।
ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীর মুক্তিযুদ্ধের মাঝামাঝি সময়ে পাকিস্তান থেকে পালিয়ে এসে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। সোনামসজিদ এলাকাসহ বিভিন্ন রণাঙ্গনে অসাধারণ সাফল্যের কারণে তাকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মুক্ত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।
বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর ১৯৪৫ খ্রিষ্টাব্দের ৬ মার্চ বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার রহিমগঞ্জ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দে মুলাদী মাহবুদজান উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন তিনি। বরিশাল বিএম কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করার পর ১৯৬৭ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিসংখ্যান বিভাগে ভর্তি হন। ওই বছরই তিনি ক্যাডেট হিসেবে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। সফলভারে প্রশিক্ষণ শেষে ইঞ্জিনিয়ারিং কোরে কমিশন লাভ করেন এবং ১৭৩ মূলতান ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যাটালিয়নে যোগদান করেন। ছয় মাস পর তাকে রিসালপুর মিলিটারি কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বদলি করা হয়।
বরিশালের নিজ গ্রামের নাম তার পরিবার ও গ্রামবাসীর ইচ্ছা অনুসারে তার ইউনিয়নের নাম ‘আগরপুর’ পরিবর্তন করে ‘মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর’ ইউনিয়ন করা হয়েছে। সরকারি প্রকল্পের মাধ্যমে বরিশাল জেলা পরিষদ ৪৯ লাখ টাকা ব্যয়ে বীরশ্রেষ্ঠের পরিবারের দান করা ৪০ শতাংশ জায়গার ওপর নির্মাণ করছে বীর শ্রেষ্ঠ মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর স্মৃতি জাদুঘর ও গ্রন্থাগার।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শহরের স্বরূপনগরে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর কলেজের নাম তার নামানুসারে রাখা হয়েছে। ঝালকাঠি জেলা স্টেডিয়ামের নামও নামকরণ হয় বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীরের নামে।