প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ রংপুর যাচ্ছেন। বিকালে রংপুর জিলা স্কুল মাঠে বিভাগীয় জনসভায় যোগ দেবেন। প্রায় ১ হাজার ২৪০ কোটি টাকার ২৭টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং পাঁচটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। প্রধানমন্ত্রীর সফর উপলক্ষে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে গোটা মহানগরী। ১ হাজারের বেশি সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। প্রবেশ পথগুলোতে সন্দেহভাজন যানবাহন ও ব্যক্তিদের তল্লাশি করা হচ্ছে। আয়োজকরা জানিয়েছে, জনসভা হবে মানুষের জনসমুদ্র, যেখান থেকে আগামী নির্বাচনি প্রচারণা শুরু করবেন প্রধানমন্ত্রী।
সফরসূচি অনুযায়ী, দুপুর সাড়ে ১২টায় রাজধানীর তেজগাঁও বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারে করে রংপুরে যাবেন প্রধানমন্ত্রী। দুপুর ২টায় তাকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি রংপুর ক্যান্টনমেন্টের হেলিপ্যাডে অবতরণ করবে। দুপুর ২টা ৫ মিনিটে সেখান থেকে তিনি সড়কপথে রংপুর সার্কিট হাউজের উদ্দেশে রওনা হবেন। সোয়া ২টার দিকে সার্কিট হাউজে পৌঁছে বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। এরপর বিকাল ৩টায় রংপুর জিলা স্কুল মাঠে মহাসমাবেশস্থলে পৌঁছাবেন। সেখানে রংপুর বিভাগের উন্নয়নে নেওয়া বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। বক্তব্য দেওয়ার পর বিকালে আবার একই পথে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত রংপুর : প্রায় এক যুগ পর রংপুরের পীরগঞ্জের লালদীঘির পুত্রবধূ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রংপুরে যাচ্ছেন। তাকে স্বাগত জানাতে আয়োজনের বিন্দুমাত্র কমতি নেই কোথাও। উজ্জীবিত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন, বিলবোর্ডে ছেয়ে গেছে পুরো নগরী। ধুয়ে মুছে চকচক করা হয়েছে রাস্তাঘাট, রোড ডিভাইডার। প্রতিদিনই কেন্দ্রীয় নেতারা আসছেন। মাঠ পরিদর্শনসহ বিভিন্ন প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন তারা।
মহাসমাবেশস্থল রংপুর জিলা স্কুল মাঠে এসএসএফসহ রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা কাজ করছেন সর্বোচ্চ সতর্কতায়। মাঠের দক্ষিণ পশ্চিম কোণায় নৌকার আদলে তৈরি করা হয়েছে সভামঞ্চ। পাশেই মিডিয়া, মুক্তিযোদ্ধা ও অতিথি কর্নার। মহানগরীর ২১টি পয়েন্টে করা হয়েছে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘এই জনসভায় প্রায় ১০ লক্ষাধিক মানুষের সমাগম ঘটবে। এই জনসভা থেকেই নির্বাচনি প্রচারণা শুরু করবেন প্রধানমন্ত্রী।’ রংপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী বলেন, ‘আমরা আশা করছি দলমত নির্বিশেষে এই জনসভায় সব শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেবেন।’
নিরাপত্তা প্রস্তুতি সম্পর্কে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (অপরাধ) আবু মারুফ হোসেন বলেন, জনসভাস্থল, পুরো শহর এবং সার্কিট হাউজ পুরোটাই আমরা সিসিটিভির কাভারেজে এনেছি। পর্যাপ্ত সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মাঠে এবং পুরো নগরী জুড়ে থাকবে। সঙ্গে থাকবে স্বেচ্ছাসেবকরা।
জনসভা মাঠে থাকবে জাতীয় পার্টিও: জনসভা আওয়ামী লীগের হলেও এতে অংশ নেবে জাতীয় পার্টি (জাপা)। এ ব্যাপারে দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন পর রংপুর আসছেন। আমরা দলমত নির্বিশেষে তাকে স্বাগত জানানোর জন্য উদগ্রীব হয়ে আছি। আমরা জনসভায় যাব। আমরা রংপুর সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে প্রায় আড়াই লাখ বোতল পানির ব্যবস্থা করেছি। সিটি করপোরেশনের অর্থায়নে সিসিটিভি ক্যামেরা বসিয়েছি। যেটা দেখভাল করবে মহানগর পুলিশ।