কলেজছাত্রীকে প্রলোভন ও জোরপূর্বক ধর্ষণের অভিযোগে রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের গভর্নিং বডির দাতা সদস্য খন্দকার মুশতাক আহমেদ আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-৮ এর বিচারক বেগম মাফরোজা পারভীনের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক ৫০ হাজার টাকা মুচলেকায় তার জামিন মঞ্জুর করেন।
এ সময় আদালতে ৭০ বছর বয়সী স্বামী গভর্নিং বডির দাতা সদস্য খন্দকার মুশতাক আহমেদ ও ১৮ বছর বয়সী কলেজ শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
এ মামলায় গত ৪ জুলাই হাইকোর্টের বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ ছয় মাসের আগাম জামিন মঞ্জুর করেন। আজ (১৯ সেপ্টেম্বর) উচ্চ আদালতের জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় তিনি আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। আদালত শুনানি শেষে তার স্থায়ী জামিন মঞ্জুর করেন।
ট্রাইব্যুনালের পেশকার মোখলেছুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এই বিষয়ে আরও সংবাদ পড়তে ক্লিক করুন
গত ১ আগস্ট ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ এর বিচারক বেগম মাফরোজা পারভীনের আদালতে আইডিয়াল স্কুলের গভর্নিং বডির দাতা সদস্য খন্দকার মুশতাক আহমেদ ও ওই কলেজের অধ্যক্ষ ফাওজিয়া রাশেদীর বিরুদ্ধে এ মামলা করেন ভুক্তভোগী। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গণ্য করে নিয়মিত মামলা হিসেবে গ্রহণের আদেশ দেন। এরপর গুলশান থানা মামলাটি এজহার হিসেবে গ্রহণ করেন।
মামলার এজহারে বাদী উল্লেখ করেন, তার মেয়ে (ভুক্তভোগী) মতিঝিল আইডিয়ালের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। আসামি মুশতাক বিভিন্ন অজুহাতে কলেজে আসতেন এবং ভুক্তভোগীকে ক্লাস থেকে প্রিন্সিপালের কক্ষে ডেকে আনতেন। খোঁজ-খবর নেওয়ার নামে আসামি ভুক্তভোগীকে বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখিয়ে প্রলুব্ধ করতেন। কিছুদিন পর আসামি মুশতাক ভুক্তভোগীকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কু-প্রস্তাব দেন। এতে রাজি না হওয়ায় ভুক্তভোগীকে তুলে নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক বিয়ে এবং তাকে ও তার পরিবারকে ঢাকা ছাড়া করবে বলে হুমকি দেন।
ভুক্তভোগী এ রকম আচরণের বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষকে (২ নম্বর আসামি) ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেন। তিনি (অধ্যক্ষ) ব্যবস্থা করতেছি বলে আসামি মুশতাককে তার রুমে নিয়ে আসেন এবং ভুক্তভোগীকেও ক্লাস থেকে নিয়ে এসে রুমের দরজা বন্ধ করে দিয়ে আসামিকে সময় ও সঙ্গ দিতে বলেন।
এ বিষয়ে বাদী ২ নম্বর আসামির কাছে প্রতিকার চাইতে গেলেও কোনো সহযোগিতা করেননি বরং আসামি মুশতাককে অনৈতিক সাহায্য করে আসতে থাকেন। বাদী উপায় না পেয়ে গত ১২ জুন ভুক্তভোগীকে ঠাকুরগাঁওয়ের বাড়িতে নিয়ে গেলে আসামি মুশতাক তার লোকজন দিয়ে ভিকটিমকে অপহরণ করে নিয়ে যান। এরপর বাদী জানতে পারেন আসামি ভিকটিমকে একেক দিন একেক স্থানে রেখে অনৈতিক কাজে বাধ্য করেছেন এবং যৌন নিপীড়ন করছেন।